প্রিন্ট

27/07/2024
বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) আইন, ২০১৯

বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) আইন, ২০১৯

( ২০১৯ সনের ১৯ নং আইন )

কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরি, গবেষণার দ্বারা শিল্প ক্ষেত্রে উদ্ভাবন, যন্ত্রাংশ তৈরি ও মেরামতপূর্বক শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি এবং এতদ্‌সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরি, গবেষণার দ্বারা শিল্প ক্ষেত্রে উদ্ভাবন, যন্ত্রাংশ তৈরি ও মেরামতপূর্বক শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি এবং এতদ্‌সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

 

 সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন

১।  (১) এই আইন বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) আইন, ২০১৯ নামে অভিহিত হইবে।

 

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা

২। বিষয় অথবা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

 

(১)   ‘কমিটি’ অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে গঠিত কমিটি অথবা কমিটিসমূহ;

 

(২)  ‘কেন্দ্র’ অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক);

 

(৩)  ‘চেয়ারম্যান’ অর্থ পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান;

 

(৪)   ‘পরিচালনা পর্ষদ’ অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত পরিচালনা পর্ষদ;

 

(৫)  ‘প্রবিধান’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

 

(৬) ‘বিধি’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি; এবং

 

(৭)   ‘মহাপরিচালক’ অর্থ কেন্দ্রের মহাপরিচালক।

কেন্দ্র প্রতিষ্ঠ

৩।  (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ২৬-০৫-১৯৬২ তারিখের Resolution No. C & P-9 (11)/62 দ্বারা প্রতিষ্ঠিত Bangladesh Industrial Technical Assistance Center বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) Bangladesh Industrial Technical Assistance Center (BITAC) নামে অভিহিত হইবে এবং এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত।

 

(২) কেন্দ্র একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে, এবং উহা স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

কেন্দ্রের কার্যালয়

৪।  (১) কেন্দ্রের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত হইবে।

 

(২) কেন্দ্র, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে-কোনো স্থানে উহার আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।

কার্যাবলি

৫।  কেন্দ্রের কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা :-

 

(ক)  কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং শিল্প কারখানার জন্য দক্ষ জনবল তৈরি;

 

(খ)  কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সরকারি এবং বেসরকারি শিল্পে নিয়োজিত অথবা শিল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের দক্ষতার মানোন্নয়ন;

 

(গ)  প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ছাত্র ছাত্রীদের শিল্প প্রতিষ্ঠান উপযোগী করিয়া গড়িয়া তুলিবার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা প্রদান;

(ঘ)  দেশি ও বিদেশি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিত কারিগরি সহযোগিতার আওতায় উদ্যোক্ত তৈরি এবং দেশীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন;

 

(ঙ)  প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কার্যকরভাবে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে তাহাদের প্রশিক্ষণ প্রদান;

 

ব্যাখ্যা।- এই দফায় ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তি’ অর্থ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ (২০১৩ সনের ৩৯ নং আইন) এর ধারা ৩ এ অন্তর্ভুক্ত এবং ধারা ৩১ এর অধীন নিবন্ধিত কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তি;

 

(চ)   গবেষণার দ্বারা উন্নতমানের পণ্য অথবা প্রযুক্তি উদ্ভাবনপূর্বক হস্তান্তর;

 

(ছ)  খুচরা যন্ত্র অথবা যন্ত্রাংশ তৈরি ও মেরামতপূর্বক শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন;

 

(জ)  প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, যন্ত্র অথবা যন্ত্রাংশের টেস্টিং ফ্যাসিলিটি, ইত্যাদি কার্যক্রমের সাহায্যে সরকারি ও বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে সার্বিক সহায়তা প্রদান;

 

(ঝ)  সরকারি ও বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের পণ্যের গুণগত মান উন্নয়ন ও দেশীয় কাঁচামালের সর্বোত্তম ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান;

 

(ঞ) সেমিনার, দলবদ্ধ আলোচনা, প্রকাশনা, প্রদর্শনী, শিক্ষামূলক চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও অনুরূপ কার্যক্রমের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি সকল উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিশেষ করিয়া নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট জ্ঞানের প্রসার ঘটানো; এবং

 

(ট)   কারিগরি ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি সংস্থার সহিত প্রশিক্ষণ, গবেষণা, প্রযুক্তি হস্তান্তর, যন্ত্রপাতি পরীক্ষা ও কারিগরি পরামর্শ বিষয়ক কার্যে যৌথ কারিগরি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক স্থাপন; এবং

(ঠ)   দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে কেন্দ্র প্রদত্ত প্রশিক্ষণের স্বীকৃতি অর্জনের ব্যবস্থা গ্রহণ।

পরিচালনা ও প্রশাসন

৬।  (১) কেন্দ্রের পরিচালনা ও প্রশাসনের দায়িত্ব একটি পরিচালনা পর্ষদের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং কেন্দ্র যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে, পরিচালনা পর্ষদও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে।

 

(২) পরিচালনা পর্ষদ উহার দায়িত্ব পালন ও কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে এই আইন, বিধি, প্রবিধান ও সরকার কর্তৃক সময় সময়, প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণ করিবে।

পরিচালনা পর্ষদ গঠন

৭।  এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কেন্দ্রের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকিবে এবং উক্ত পরিচালনা পর্ষদ নিম্নরূপ সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা :-

 

(ক)  সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়, যিনি উহার চেয়ারম্যানও হইবেন;

 

(খ)  অতিরিক্ত সচিব অথবা যুগ্মসচিব (বিটাক উইং), শিল্প মন্ত্রণালয়;

 

(গ)  অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

 

(ঘ)  মহাপরিচালক, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর;

 

(ঙ)  মহাপরিচালক, শ্রম অধিদপ্তর;

 

(চ)   মহাপরিচালক, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো;

 

(ছ)  জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত উক্ত কর্তৃপক্ষের ১ (এক) জন সদস্য;

 

(জ)  বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত উক্ত কর্তৃপক্ষের ১ (এক) জন নির্বাহী সদস্য;

 

(ঝ)  সভাপতি, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স এসোসিয়েশন;

 

(ঞ) সভাপতি, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি; এবং

 

(ট)   কেন্দ্রের মহাপরিচালক, যিনি উহার সদস্য সচিবও হইবেন।

পরিচালনা পর্ষদের সভা

৮।  (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানসাপেক্ষে, পরিচালনা পর্ষদ উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

 

(২) পরিচালনা পর্ষদের সভা, চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে এবং তৎকর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে।

 

(৩) চেয়ারম্যান পরিচালনা পর্ষদের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো সদস্য সভাপতিত্ব করিবেন।

 

(৪) সভাপতিসহ অন্যূন পরিচালনা পর্ষদের এক তৃতীয়াংশ সদস্যদের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হইবে, তবে মুলতবি সভার ক্ষেত্রে কোরামের প্রয়োজন হইবে না।

 

(৫) পরিচালনা পর্ষদের সভায় প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে, তবে ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় অথবা নির্ণায়ক ভোট থাকিবে।

 

(৬) প্রত্যেক ইংরেজি পঞ্জিকা বৎসরে পরিচালনা পর্ষদের অন্যূন দুইটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।

 

(৭) কোনো সদস্য পদে কেবল শূন্যতা অথবা পরিচালনা পর্ষদ গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে পরিচালনা পর্ষদের কার্য অথবা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।

কমিটি গঠন

৯।  পরিচালনা পর্ষদ উহার কার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে, প্রয়োজনে, এক অথবা একাধিক কমিটি গঠন করিতে পারিবে।

মহাপরিচালক

১০।  (১) কেন্দ্রের একজন মহাপরিচালক থাকিবেন, যিনি সরকারের অতিরিক্ত সচিবগণের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন।

 

(২) মহাপরিচালক কেন্দ্রের সার্বক্ষণিক প্রধান নির্বাহী হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন এবং কেন্দ্রের সুষ্ঠু প্রশাসনের জন্য দায়ী থাকিবেন।

 

(৩) মহাপরিচালকের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা, বা অন্য কোনো কারণে তিনি দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্যপদে নবনিযুক্ত মহাপরিচালক কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত বা তিনি পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, সরকার কর্তৃক মনোনীত কোনো ব্যক্তি মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করিবেন।

মহাপরিচালকের দায়িত্ব ও ক্ষমতা

১১।  মহাপরিচালক নিম্নরূপ কার্যসমূহ সম্পাদন করিবেন, যথা :

 

(ক)  পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন;

 

(খ)  সরকার অনুমোদিত বাজেট হইতে আর্থিক বিধি বিধান অনুযায়ী সংস্থার ব্যয় নির্বাহ;

 

(গ)  প্রধান কার্যালয় এবং আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহে গৃহীত কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন;

 

(ঘ)  পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক সময় সময় অর্পিত ক্ষমতাসমূহ প্রয়োগ;

 

(ঙ)  কমিটির সুপারিশ এবং পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে সকল কর্মচারীর নিয়োগ, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ; এবং

 

(চ)   পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত যে-কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান অথবা সমিতির সহিত কেন্দ্রের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যে-কোনো কার্য সম্পর্কিত চুক্তি সম্পাদন ও নবায়নে কেন্দ্রের পক্ষে স্বাক্ষর প্রদান।

 

কর্মচারী নিয়োগ, ইত্যাদি

১২।  (১) কেন্দ্র উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো-অনুযায়ী এবং সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত সাধারণ  ও বিশেষ নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।

 

(২) কেন্দ্রের কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাদি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

তহবিল

১৩।  (১) কেন্দ্রের জন্য একটি তহবিল থাকিবে এবং নিম্নরূপ উৎস হইতে তহবিলে অর্থ জমা হইবে, যথা :

 

(ক)  সরকারি অনুদান;

 

(খ)  প্রশিক্ষণ ফি, খুচরা যন্ত্রাংশ প্রস্তুত বাবদ প্রাপ্ত অর্থ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে সেবা প্রদানের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ;

 

(গ)  সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কোনো বিদেশি সরকার, সংস্থা অথবা আন্তর্জাতিক সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান;

 

(ঘ)  ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ হইতে প্রাপ্ত মুনাফা;

 

(ঙ)  সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো উৎস হইতে গৃহীত ঋণ; এবং

 

(চ)   সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বিনিয়োগ হইতে প্রাপ্ত মুনাফা বা অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।

 

(২) কেন্দ্রের তহবিলের সকল অর্থ কোনো তপশিলি ব্যাংকে কেন্দ্রের নামে জমা রাখিতে হইবে এবং সরকারের প্রচলিত বিধি-বিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তহবিল পরিচালনা করিতে হইবে।

 

ব্যাখ্যাএই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ‘‘তপশিলি ব্যাংক’’ অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. 127 of 1972) (এর) Article 2 (j) তে সংজ্ঞায়িত কোনো ‘‘Scheduled Bank

 

(৩) তহবিলের অর্থ হইতে সরকারি বিধি-বিধান অনুসরণক্রমে কেন্দ্রের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করা যাইবে।

 

(৪) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো খাতে তহবিল বা উহার অংশ বিশেষ বিনিয়োগ করা যাইবে।

বাজেট

১৪। কেন্দ্র, প্রতিবৎসর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, পরবর্তী অর্থবৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থবৎসরে সরকারের নিকট হইতে কেন্দ্রের জন্য কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে।

বার্ষিক প্রতিবেদন

১৫।  (১) কেন্দ্র, পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে প্রতি বৎসর তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলির বিবরণসংবলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করিবে।

 

(২) সরকার, প্রয়োজনে, যে-কোনো সময়, কেন্দ্রের নিকট হইতে উহার যে-কোনো বিষয়ের উপর প্রতিবেদন অথবা বিবরণী আহবান

হিসাব ও নিরীক্ষা

১৬।  (১) কেন্দ্র যথাযথভাবে উহার হিসাব সংরক্ষণ করিবে এবং লাভ-ক্ষতির হিসাব ও স্থিতিপত্রসহ বার্ষিক হিসাব বিবরণী প্রস্তুত করিবে এবং এইরূপ হিসাব সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক, সময়ে সময়ে, প্রদত্ত সাধারণ নির্দেশনা পালন করিবে।

 

(২) বাংলাদেশের মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহাহিসাব-নিরীক্ষক বলিয়া উল্লিখিত, প্রতি বৎসর কেন্দ্রের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের প্রয়োজনীয় সংখ্যক অনুলিপি সরকার ও কেন্দ্রের নিকট পেশ করিবেন।

 

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা প্রতিবেদনের উপর কোনো আপত্তি উত্থাপিত হইলে উহা নিষ্পত্তির জন্য কেন্দ্র অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

 

(৪) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b) এ সংজ্ঞায়িত কোনো "chartered accountant" দ্বারা কেন্দ্রের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে কেন্দ্র এক বা একাধিক "chartered accountant" নিয়োগ করিতে পারিবে এবং এইরূপ নিয়োগকৃত "chartered accountant" সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত হারে পারিতোষিক প্রাপ্য হইবেন।

 

(৫) কেন্দ্রের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহাহিসাব-নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা উপ-ধারা (৪) এর অধীন নিয়োগকৃত chartered accountant কেন্দ্রের সকল রেকর্ড, দলিলাদি, বার্ষিক ব্যালেন্স সিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার বা অন্যবিধ সম্পত্তি, ইত্যাদি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান, সদস্য বা কেন্দ্রের যে কোনো কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।

ক্ষমতা অর্পণ

১৭।  মহাপরিচালক, প্রয়োজনবোধে এবং তদ্‌কর্তৃক নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, এই আইনের অধীন তাহার উপর অর্পিত যে কোনো ক্ষমতা বা দায়িত্ব লিখিত আদেশ দ্বারা কেন্দ্রের ৯ম গ্রেড ও তদূর্ধ্ব গ্রেডের কোনো কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবেন।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

১৮।  এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

 

প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা

১৯।  এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কেন্দ্র, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন অথবা বিধির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।

রহিতকরণ ও হেফাজত

২০।  (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, ২৬-০৫-১৯৬২ তারিখের Resolution No. C & P-9 (11)/62 এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।

 

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত Resolution এর অধীন-

 

(ক)  কৃত কোনো কার্য অথবা গৃহীত কোনো ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত অথবা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; এবং

 

(খ)  প্রণীত কোনো উপ-আইন (bye-law), জারিকৃত প্রজ্ঞাপন, আদেশ, নির্দেশ, অনুমোদন, সুপারিশ, গৃহীত সকল পরিকল্পনা অথবা কার্যক্রম, অনুমোদিত সকল বাজেট এবং কৃত সকল কার্যক্রম উক্তরূপ রহিতের অব্যবহিত পূর্বে বলবৎ থাকিলে এবং এই আইনের কোনো বিধানের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে এই আইনের অনুরূপ বিধানের অধীন প্রণীত, জারিকৃত, প্রদত্ত, অনুমোদিত এবং কৃত বলিয়া গণ্য হইবে, এবং মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা এই আইনের অধীন রহিত অথবা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত, বলবৎ থাকিবে।

 

(৩) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে, উক্ত Resolution দ্বারা গঠিত Bangladesh Industrial Technical Assistance Center এর-

 

(ক)  সকল ঋণ ও দায়-দায়িত্ব কেন্দ্রের ঋণ ও দায়-দায়িত্ব বলিয়া গণ্য হইবে;

 

(খ)  বিরুদ্ধে অথবা তৎকর্তৃক দায়েরকৃত কোনো মামলা, গৃহীত কার্যধারা অথবা সূচিত যে-কোনো কার্যক্রম অনিষ্পন্ন থাকিলে উহা এমনভাবে চলমান থাকিবে ও নিষ্পন্ন হইবে, যেন উহা এই আইনের অধীন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অথবা তৎকর্তৃক দায়েরকৃত, গৃহীত অথবা সূচিত হইয়াছে;

 

(গ)  সকল চুক্তি ও দলিল, যাহাতে উহা পক্ষ ছিল, কেন্দ্রের অনুকূলে অথবা বিরুদ্ধে এমন ভাবে বলবৎ ও কার্যকর থাকিবে, যেন কেন্দ্র উহাতে পক্ষ ছিল;

 

(ঘ)  কর্মচারীগণ যে নিয়ম ও শর্তে উহাতে কর্মরত ছিলেন, পরিবর্তিত অথবা পুনরাদেশ প্রদান না করা পর্যন্ত, সেই একই নিয়ম ও শর্তে কেন্দ্রের কর্মচারী হিসাবে গণ্য হইবেন; এবং

 

(ঙ)  সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুবিধা, ফি, তহবিল এবং স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, নগদ অর্থ, ব্যাংক জমা ও আমানতসহ তহবিল এবং এইরূপ বিষয় সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত অথবা বিষয় সম্পত্তি হইতে উদ্ভূত অন্যান্য যাবতীয় অধিকার ও স্বার্থ এবং সকল হিসাব বই, রেজিস্টার, রেকর্ডপত্র এবং এইসব সংক্রান্ত অন্যান্য সকল দলিল-দস্তাবেজ কেন্দ্রে হস্তান্তরিত এবং কেন্দ্র উহার অধিকারী হইবে।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

২১। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।

 

(২) ইংরেজি পাঠ ও মূল-বাংলা পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs