প্রিন্ট
খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন বা এতদ্সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অপরাধমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধকল্পে Food (Special Courts) Act, 1956 এবং Foodgrains Supply (Prevention of Prejudicial Activity) Ordinance, 1979 রহিতক্রমে যুগোপযোগী করিয়া নূতন আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন বা এতদ্সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অপরাধমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধ করা আবশ্যক; এবং
যেহেতু বিদ্যমান Food (Special Courts) Act, 1956 (Act No. X of 1956) এবং Foodgrains Supply (Prevention of Prejudicial Activity) Ordinance, 1979 (Ordinance No. XXVI of 1979) রহিতক্রমে যুগোপযোগী করিয়া নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-
১। (১) এই আইন খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(১) ‘উৎপাদন’ অর্থ ধান হইতে চাল বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্য, গম হইতে আটা, ময়দা বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্য এবং ভুট্টা হইতে কোনো খাদ্য দ্রব্য প্রস্তুতকরণ;
(২) ‘খাদ্যদ্রব্য’ অর্থ যেকোনো প্রকার দানাদার খাদ্যদ্রব্য, যথা:- চাল, ধান, গম, আটা, ভুট্টা, ইত্যাদি;
(৩) ‘খাদ্য পরিদর্শক’ অর্থ খাদ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট অধিক্ষেত্রে খাদ্য পরিদর্শক হিসাবে নিয়োজিত কোনো কর্মচারী এবং উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বা এতদুদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারীও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৪) ‘খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত’ অর্থ ধারা ১৫ এ বর্ণিত খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত;
(৫) ‘ঠিকাদার’ অর্থ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় খাদ্যদ্রব্য মজুত বা নৌ, সড়ক, রেলপথ বা অন্য কোনো উপায়ে পরিবহণ বা পরিবহণ যান হইতে উঠানো, নামানো, খামালজাত বা এতদ্সংশ্লিষ্ট যেকোনো কার্য সম্পাদনের জন্য তালিকাভুক্ত, চুক্তিবদ্ধ বা অন্য কোনো উপায়ে নিযুক্ত ব্যক্তি বা সংস্থা;
(৬) ‘ডিলার’ অর্থ এমন কোনো ব্যক্তি যিনি শর্তসাপেক্ষে নিযুক্ত যেকোনো উৎপাদনকারী, শোধনকারী, আমদানিকারক বা কোনো সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার পক্ষে খাদ্যদ্রব্য মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন ও এতদ্সংশ্লিষ্ট যেকোনো কার্যক্রমে নিয়োজিত থাকেন;
(৭) ‘বিতরণ’ অর্থ ব্যবসায়ী, ডিলার, প্রকল্প চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি বা কোনো ব্যক্তি কর্তৃক উপকারভোগী বা ভোক্তার নিকট খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করা;
(৮) ‘বিপণন’ অর্থ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি ব্যক্তি বা সংস্থা কর্তৃক ভোক্তা, উপকারভোগী বা যেকোনো সরকারি, আধাসরকারি স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট অর্থের বিনিময়ে খাদ্যদ্রব্য প্রদান করা;
(৯) ‘ব্যক্তি’ অর্থ কোনো প্রাকৃতিক সত্তাবিশিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি, অংশীদারি কারবার, কর্পোরেশন, ফার্ম, সমিতি, সংঘ, সংস্থা বা ব্যক্তিসমষ্টি, সংবিধিবন্ধ হউক বা না হউক;
(১০) ‘মজুত (hoarding)’ অর্থ কোনো ব্যক্তি কর্তৃক কোনো মিল, কারখানা, গুদাম, ঘর, যানবাহন বা অন্য কোনো স্থানে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণের অধিক পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুত করিয়া রাখা,
(১১) ‘মিল মালিক’ অর্থ খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও শোধনের জন্য স্থাপিত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান;
(১২) ‘শ্রমিক’ অর্থ খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণনে নিযুক্ত বা কোনো পরিবহণ যান হইতে নামানো বা উঠানো, সরকারি অথবা বেসরকারি গুদামে খামালজাতকরণ, ডাম্পিং, স্তূপীকরণ বা এতদ্সংশ্লিষ্ট যেকোনো কার্যে মঞ্জুরির বিনিময়ে নিয়োজিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ;
(১৩) ‘সরবরাহ’ অর্থ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি গুদাম, দোকান, গৃহ, লাইটার, কোস্টার, অন্য কোনো যান বা যেকোনো স্থান হইতে খাদ্যদ্রব্য ব্যবসায়ী, মিল মালিক, ডিলার, ঠিকাদার, প্রকল্প চেয়ারম্যান বা কোনো ব্যক্তির নিকট সরবরাহ করা।
৩। যদি কোনো ব্যক্তি-
(ক) কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য হইতে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে উক্তরূপ জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করিয়া ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করেন;
(খ) খাদ্যদ্রব্যের মধ্য হইতে কোনো স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অপসারণ করিয়া বা পরিবর্তন করিয়া উৎপাদন করেন বা বিপণন করেন;
(গ) খাদ্যদ্রব্যের সহিত মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদান মিশ্রণ করিয়া উৎপাদন করেন বা বিপণন করেন;
(ঘ) খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ইস্যুকৃত খাদ্যশস্য ব্যবসার লাইসেন্স ব্যতীত বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দ্বারা কোনো ব্যবসা পরিচালনা বা লাইসেন্সে উল্লিখিত পরিমাণের অধিক পরিমাণ খাদ্যশস্য বিপণন করেন;
তাহা হইলে, উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
৪। কোনো ব্যক্তি সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণের অধিক পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুত করিলে বা মজুত সংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করিলে, উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১৪ (চৌদ্দ) বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করিতে পারেন যে, তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো প্রকার লাভের উদ্দেশ্য ব্যতীত মজুত করিয়াছিলেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
৫। কোনো ব্যক্তি-
(ক) পুরাতন বা মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য পলিশিং বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্যের সহিত মিশ্রণ করিয়া;
(খ) সরকার কর্তৃক খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহকালে সরকারি গুদামে রক্ষিত খাদ্যদ্রব্য বৈধ বা অবৈধভাবে সংগ্রহ করিয়া:
(গ) দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য;
(ঘ) সরকারি গুদামের পুরাতন বা বিতরণকৃত সিল বা বিতরণ করা হইয়াছে এইরূপ চিহ্নযুক্ত খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ; বা
(ঙ) আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণগত বা গুণগত পরিবর্তন করিয়া অথবা অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে;
সরকারি গুদামে সরবরাহ করিলে, উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
৬। কোনো ব্যক্তি খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত বিতরণকৃত সিল বা বিতরণ করা হইয়াছে এইরূপ চিহ্নযুক্ত সিল ব্যতীত সরকারি গুদামের খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় বা বিক্রয় করিলে, উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দন্ডনীয় হইবেন।
৭। কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করিলে, উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনূষ্ঠ ১৫ (পনেরো) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
৮। এই আইনের অধীন শ্রমিক, কর্মচারী, ঠিকাদার, মিল মালিক, ডিলার বা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন বা এতদ্সংক্রান্ত কোনো কর্মসম্পাদনে নিজে বিরত থাকিলে বা সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তিকে তাহার কর্তব্য পালনে বিরত থাকিতে বাধ্য বা প্ররোচিত করিলে বা তাহাদের মধ্যে অসন্তোষ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করিলে, উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনুর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
৯। কোনো কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে উক্ত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানির এইরূপ প্রত্যেক প্রধান নির্বাহী, পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, উক্ত লঙ্ঘন তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায়—
(ক) ‘কোম্পানি’ অর্থে সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অংশীদারি কারবার বা একাধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনও অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং
(খ) ‘পরিচালক’ অর্থে অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ডের সদস্যও অন্তর্ভুক্ত হইবে।
১০। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, খাদ্য পরিদর্শক যে কোনো সময়, কোনো গুদাম, মিল, কারখানা বা অন্য কোনো স্থানে প্রবেশ ও পরিদর্শন করিতে পারিবেন।
(২) খাদ্য পরিদর্শকের যদি বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, কোনো ব্যক্তি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে বা হইবার সম্ভাবনা রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি সংশ্লিষ্ট গুদাম, মিল, নৌযান, যানবাহন, কোস্টার, লাইটার, ঘর, কারখানা বা মজুত করিবার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত যেকোনো স্থান সিলগালা করিতে পারিবেন এবং অপরাধ সংশ্লিষ্ট খাদ্যদ্রব্য ও অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি জব্দ করিতে পারিবেন।
(৩) খাদ্য পরিদর্শক উপধারা (২) এর অধীন জব্দকৃত খাদ্যদ্রব্য ও সরঞ্জামাদির একটি তালিকা প্রস্তুত করিবেন এবং উহাতে সংশ্লিষ্ট মালিক বা তাহার প্রতিনিধি এবং উপস্থিত ২ (দুই) জন সাক্ষীর স্বাক্ষরসহ নিজে স্বাক্ষর করিবেন।
(৪) উপধারা (২) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইলে খাদ্য পরিদর্শক এখতিয়ারসম্পন্ন আদালত বা অধিক্ষেত্রভুক্ত থানায় মামলা দায়ের করিবেন।
(৫) উপধারা (২) এর অধীন জব্দকৃত খাদ্যদ্রব্য অথবা খাদ্যদ্রব্যের নমুনা যাতায়াতের সময় ব্যতীত ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টার মধ্যে এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতে উপস্থাপন করিতে হইবে এবং সরঞ্জামাদি সম্পর্কে একই সময়ের মধ্যে এখতিয়ারসম্পন্ন আদালতকে অবহিত করিতে হইবে।
১১। (১) জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, এই আইনের অধীন জব্দকৃত খাদ্যদ্রব্য——
(ক) দ্রুত পচনশীল হইলে স্বীয় বিবেচনায় আলামত হিসাবে প্রয়োজনীয় পরিমাণ নমুনা সংরক্ষণ করিয়া অবশিষ্ট পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ্য নিলামে বিক্রয় বা অন্য কোনো উপায়ে নিষ্পত্তির আদেশ প্রদান করিবেন;
(খ) দ্রুত পচনশীল না হইলে আলামত হিসাবে প্রয়োজনীয় পরিমাণ নমুনা সংরক্ষণ করিয়া অবশিষ্ট পরিমাণ সর্বোচ্চ ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) কার্যদিবসের মধ্যে প্রকাশ্য নিলামে বা বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক অন্য কোনো আইনসম্মত উপায়ে বিক্রয় বা অন্য কোনো উপায়ে নিষ্পত্তির আদেশ প্রদান করিবেন।
(২) উপধারা (১) এর অধীন বিক্রয়লব্ধ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করিতে হইবে।
(৩) মামলা নিষ্পত্তির পর অপরাধ প্রমাণিত হইলে, বিক্রয়লব্ধ অর্থ সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হইবে, তবে অপরাধ প্রমাণিত না হইলে, বিক্রয়লব্ধ সমুদয় অর্থ জব্দকৃত খাদ্যদ্রব্যের প্রকৃত মালিককে ফেরত প্রদান করিতে হইবে।
১২। এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন কোনো অপরাধের মামলা দায়ের, জামিন, তদন্ত, বিচার এবং আনুষঙ্গিক সকল বিষয়ে Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এর বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
১৩। এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে অন্যূন খাদ্য পরিদর্শক বা উপ-পুলিশ পরিদর্শকের লিখিত অভিযোগ ব্যতীত কোনো আদালত এই আইনের অধীন সংঘটিত কোনো অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ করিবে না।
১৪। (১) এই আইনের অধীন সংঘটিত সকল অপরাধ আমলযোগ্য (cognizable) হইবে।
(২) এই আইনের ধারা ৩, ৫, ৬, ৭ এবং ৮ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ জামিনযোগ্য (bailable) হইবে এবং ধারা ৪ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ অ-জামিনযোগ্য (non-bailable) হইবে।
১৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় সংখ্যক আদালত থাকিবে, যাহা খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত নামে অভিহিত হইবে।
(২) এই আইনের ধারা ৩, ৫, ৬, ৭ এবং ৮ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ বিচারের উদ্দেশ্যে সরকার, সুপ্রিম কোর্টের সহিত পরামর্শক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত হিসাবে নির্ধারণ করিতে পারিবে এবং একাধিক আদালত নির্ধারণ করা হইলে উহাদের প্রত্যেকটি আদালতের জন্য স্থানীয় অধিক্ষেত্র নির্দিষ্ট করিবে।
(৩) এই আইনের ধারা ৪ এর অধীন সংঘটিত অপরাধ দায়রা আদালত কর্তৃক বিচার্য হইবে।
১৬। Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত এই আইনে উল্লিখিত যে কোনো দণ্ড আরোপ করিতে পারিবে।
১৭। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এই আইনের ধারা ৩, ৫, ৬ এবং ৮ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ, উক্ত আইনের তপশিলভুক্ত হওয়া সাপেক্ষে, মোবাইল কোর্ট কর্তৃক বিচার্য হইবে।
১৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
১৯। (১) Food (Special Courts) Act, 1956 (Act No. X of 1956) এবং Foodgrains Supply (Prevention of Prejudicial Activity) Ordinance, 1979 (Ordinance No. XXVI of 1979), অতঃপর উক্ত রহিতকৃত আইন ও অধ্যাদেশ বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।
(২) উপধারা (১) এর অধীন উক্তরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও, উক্ত রহিতকৃত আইন ও অধ্যাদেশের অধীন-
(ক) কৃত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা বৈধভাবে কৃত, গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;
(খ) দায়েরকৃত কোনো মামলা, গৃহীত কোনো কার্য বা ব্যবস্থা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে, উহা উক্ত রহিতকৃত আইনের অধীন এইরূপভাবে নিষ্পত্তি করিতে হইবে যেন উহা রহিত হয় নাই।
২০। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, প্রয়োজনবোধে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিতে পারিবে।
(২) বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।