প্রিন্ট

09/09/2024
চিড়িয়াখানা আইন, ২০২৩

চিড়িয়াখানা আইন, ২০২৩

( ২০২৩ সনের ৪৫ নং আইন )

সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত চিড়িয়াখানায় প্রাণি সংগ্রহ, লালন-পালন, কল্যাণ, চিকিৎসা, প্রজনন, সংরক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও চিড়িয়াখানার উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোগত সুবিধাদি এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত চিড়িয়াখানায় প্রাণি সংগ্রহ, লালন-পালন, কল্যাণ, চিকিৎসা, প্রজনন, সংরক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও চিড়িয়াখানার উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোগত সুবিধাদি এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন

১।  (১) এই আইন চিড়িয়াখানা আইন, ২০২৩ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত চিড়িয়াখানার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।

(৩) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা

২।  বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-

(১) “উপদেষ্টা পরিষদ” অর্থ ধারা ৫ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান অনুযায়ী গঠিত চিড়িয়াখানার উপদেষ্টা পরিষদ;

(২) "কিউরেটর" অর্থ ধারা ৭ এব অধীন নিয়োগকৃত কিউরেটর;

(৩) "চিড়িয়াখানা” অর্থ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক স্থাপিত ও পরিচালিত চিড়িয়াখানাসহ উক্ত অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তরিত অন্য কোনো চিড়িয়াখানা;

(৪) "পরিচালক" অর্থ ধারা ৭ এর অধীন নিয়োগকৃত চিড়িয়াখানার পরিচালক;

(৫) "জাতীয় চিড়িয়াখানা" অর্থ ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা;

(৬) "প্রাণি" অর্থ মানুষ ব্যতীত যে কোনো প্রাণি;

(৭) "ফৌজদারী কার্যবিধি" অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act No. V of 1898);

(৮) “বন্যপ্রাণি" অর্থ বিভিন্ন প্রকার ও জাতের প্রাণি বা তাহাদের জীবনচক্র বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়সমূহ যাহাদের উৎস বন্য হিসাবে বিবেচিত;

(৯) "বিধি" অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(১০) "বিপন্ন প্রজাতি” অর্থ কোনো বন্যপ্রাণি যাহা বর্তমানে প্রকৃতিতে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রহিয়াছে এবং অদূর ভবিষ্যতে বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রহিয়াছে;

(১১) “ভেটেরিনারি কর্মকর্তা" অর্থ বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন, ২০১৯ (২০১৯ সনের ১৩ নং আইন) এর ধারা ৪ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল এর নিকট হইতে ভেটেরিনারিয়ান হিসাবে নিবন্ধিত কোনো ব্যক্তি; এবং

(১২) "মহাপরিচালক" অর্থ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

আইনের প্রাধান্য

৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।

চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনা

৪। এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, প্রতিটি চিড়িয়াখানা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নিম্নবর্ণিত কার্যাবলি সম্পাদন করিতে হইবে, যথা:-

(ক) চিড়িয়াখানায় প্রাণি লালন-পালন, ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ;

(খ) শিক্ষা এবং বিনোদনের উদ্দেশ্যে প্রাণি সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা;

(গ) চিড়িয়াখানায় অবস্থিত প্রাণির জীবন ও কল্যাণ বিষয়ে শিক্ষা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ ও পরিচালনা;

(ঘ) দর্শনার্থীদের জন্য কার্যকর বিনোদন সেবা ও সুবিধাদি তৈরি এবং উক্ত সেবা ও সুবিধাদি অব্যাহতভাবে বলবৎ রাখা, নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন; এবং

(ঙ) চিড়িয়াখানাকে যতটা সম্ভব সংগৃহীত প্রাণির উপযোগী প্রাকৃতিক পরিবেশে রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ।

উপদেষ্টা পরিষদ

৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, চিড়িয়াখানাসমূহের সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য নিম্নরূপ সদস্য সমন্বয়ের একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হইবে, যথা:-

(ক) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, যিনি ইহার প্রধান উপদেষ্টা হইবেন;

(খ) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিমন্ত্রী, যদি থাকেন;

(গ) জাতীয় সংসদের স্পীকার কর্তৃক মনোনীত একজন সংসদ-সদস্য;

(ঘ) সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়;

(ঙ) সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়;

(চ) সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়;

(ছ) সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়;

(জ) পুলিশ মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশ;

(ঝ) উপাচার্য, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়;

(ঞ) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট;

(ট) পরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা;

(ঠ) সরকার কর্তৃক মনোনীত বন্যপ্রাণি লালনপালন বা প্রাণিবিজ্ঞান বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ; এবং

(ড) মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, যিনি ইহাব সদস্য-সচিব হইবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঠ) এর অধীন মনোনীত সদস্য মনোনয়নের তারিখ হইতে পরবর্তী ৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত স্বীয় পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ মনোনীত সদস্য মেয়াদ উত্তীর্ণের পূর্বে যে কোনো সময় স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেনো, উপ-ধারা (১) এর দফা (ঠ) এর অধীন মনোনীত সদস্যকে সরকার যে কোনো সময় তাহার দায়িত্ব হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।

উপদেষ্টা পরিষদের সভা

৬। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, উপদেষ্টা পরিষদ উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) উপদেষ্টা পরিষদের সভা উহার প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক নির্ধারিত স্থান, তারিখ ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রতি বৎসর উপদেষ্টা পরিষদের অন্যূন একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) উপদেষ্টা পরিষদের সকল সভায় উহার প্রধান উপদেষ্টা সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক মনোনীত উপদেষ্টা পরিষদের কোনো সদস্য উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।

(৪) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় কোরামের জন্য উহার মোট সদস্য সংখ্যার অর্ধেক সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে, তবে মুলতবী সভার ক্ষেত্রে কোনো কোরামের প্রয়োজন হইবে না।

(৫) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উপস্থিত প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী সদস্যের দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

(৬) উপদেষ্টা পরিষদ গঠনে ত্রুটি বা কেবল কোনো সদস্যপদে শূন্যতা থাকিবার কারণে উপদেষ্টা পরিষদের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।

(৭) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর উপদেষ্টা পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে।

পরিচালক, কিউরেটর ও অন্যান্য কর্মচারি নিয়োগ

৭। (১) সরকার জাতীয় চিড়িয়াখানা বা সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত কোনো চিড়িয়াখানা পরিচালনার জন্য একজন পরিচালক, কিউরেটর ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক অন্যান্য কর্মচারি নিয়োগ করিতে পারিবে।

(২) পরিচালক, কিউরেটর ও কর্মচারিদের নিয়োগ, চাকুরির শর্তাবলি ও দায়দায়িত্ব বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

প্রাণির খাঁচা, আবাসন, প্রদর্শন, তথ্য সংরক্ষণ, ইত্যাদি

৮। (১) কিউরেটর চিড়িয়াখানায় সংরক্ষিত প্রাণির প্রকৃতি ও চাহিদা অনুযায়ী নিম্নরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন, যথা:-

(ক) প্রাণির প্রকৃতি বিবেচনা করিয়া ন্যূনতম প্রাকৃতিক পরিবেশ বা সুবিধাদি সম্পন্ন খাঁচায় আবদ্ধ বা মুক্ত রাখা;

(খ) প্রাণির প্রকৃতিগত আচরণ, সংশ্লিষ্ট প্রাণির লালন-পালন কার্যে নিয়োজিত ব্যক্তি এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনা করিয়া প্রাণির খাঁচার অবকাঠামো তৈরি;

(গ) প্রদর্শনের জন্য রাখা প্রতিটি প্রাণির জীবন ও প্রকৃতির উপর সংক্ষিপ্ত বিবরণী এবং দর্শনার্থী কর্তৃক প্রাণির পীড়নের কারণ হয় এমন আচরণ না করা সম্পর্কিত বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় সতর্কবাণী সংক্রান্ত নোটিশ বা বিজ্ঞপ্তি বা অন্য কোনো মাধ্যমে সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা; এবং

(ঘ) প্রাণির খাদ্য, প্রাণির খাঁচা, আবাসন, প্রদর্শন বা অনুরূপ বিষয়ে সরকার বা মহাপরিচালক কর্তৃক সময় সময় প্রদত্ত নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং এতদ্ববিষয়ে উপযুক্ত বলিয়া বিবেচিত অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ।

(২) ভোটেরিনারি কর্মকর্তা কর্তৃক নির্দেশিত না হইয়া প্রকৃতিগত কারণে দলবদ্ধভাবে অবস্থানকারী প্রাণিদের মধ্য হইতে কোনো প্রাণিকে আলাদা বা এককভাবে রাখা যাইবে না।

(৩) কোনো প্রাণির স্বাভাবিক আচরণের বাহিরে অলসতা বা নিদ্রালুতা, ক্ষুধামন্দা, আঘাতজনিত ক্ষতচিহ্ন বা অন্য কোনো কারণে অস্বাভাবিক আচরণ পরিলক্ষিত হইলে উক্ত প্রাণির যথাযথ চিকিৎসা ও সেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।

(৪) চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণি রোগাক্রান্ত হইলে বা উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত কোনো অস্বাভাবিক আচরণ পরিলক্ষিত হইলে উক্ত রোগের কারণ বা অস্বাভাবিক আচরণ এবং অসুস্থতা বা অস্বাভাবিক আচরণ নিরসনের জন্য কি ধরনের চিকিৎসা ও সেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইয়াছে তাহা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করিতে হইবে।

(৫) চিড়িয়াখানায় অবস্থিত প্রাণির দেহে যে সকল রোগ-জীবাণু প্রাণি হইতে প্রাণিতে বা মানুষে সংক্রমণযোগ্য সে সকল রোগ-জীবাণু বা পরজীবির সীমা বা মাত্রা (parasitic load) নির্ণয়ের জন্য, প্রযোজ্যতা অনুযায়ী, নিয়মিতভাবে প্রত্যেক প্রাণিকে পরীক্ষা এবং প্রাপ্ত তথ্য প্রত্যেক প্রাণির জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পৃথকভাবে সংরক্ষণ করিতে হইবে।

প্রাণির চিকিৎসা, চিকিৎসা সামগ্রী, প্রশিক্ষণ, ইত্যাদি

৯। (১) চিড়িয়াখানায় প্রাণিসেবা প্রদানের জন্য উপযুক্ত অবকাঠামো, দেশে ও বিদেশে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং ভেটেরিনারি কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, জরুরি ঔষধ ও অন্যান্য চিকিৎসা সেবা সামগ্রী রাখিতে হইবে।

(২) ভেটেরিনারি কর্মকর্তার পরামর্শ বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, উপস্থিতি ব্যতীত কোনো প্রাণিকে চেতনানাশক (tranquilizer) প্রয়োগ করা যাইবে না:

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো বিশেষ পরিস্থিতি বা জরুরি প্রয়োজনে কিউরেটরের নির্দেশে বা উপস্থিতিতে প্রাণি লালনপালনকার্যে নিয়োজিত ব্যক্তি বা অভিজ্ঞ কোনো কর্মচারী দ্বারা চেতনানাশক প্রয়োগ করা যাইতে পারে।

(৩) মহাপরিচালক বা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চিড়িয়াখানার মৃত প্রাণির নমুনা সংগ্রহ, ময়না তদন্ত, মৃতদেহ নিষ্পত্তি বা অনুরূপ বিষয়ে লিখিত পরামর্শ প্রদান করিতে পারিবেন।

প্রাণি সংগ্রহ, প্রজনন, ইত্যাদি

১০। (১) সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ ব্যতীত, কোনো চিড়িয়াখানায় বিদেশি প্রজাতির বন্যপ্রাণি ক্রয় বা বিনিময় বা উপহার বা অন্য কোনোভাবে সংগ্রহ করা যাইবে না।

(২) বন্যপ্রাণি সংগ্রহের ক্ষেত্রে বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৩০ নং আইন) বা তদধীন প্রণীত বিধিমালার বিধানাবলি অনুসরণ করিতে হইবে।

(৩) চিড়িয়াখানাতে কোনো নির্দিষ্ট কারণ ব্যতিরেকে কোনো অবস্থাতেই কেবল একই প্রজাতির একই লিঙ্গের একটি প্রাণি রাখা যাইবে না।

(৪) সরকার কোনো বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য এক বা একাধিক চিড়িয়াখানা নির্দিষ্ট করিতে পারিবে।

(৫) সরকার উপযুক্ত বিবেচনা করিলে কোনো চিড়িয়াখানায় সংরক্ষিত বন্যপ্রাণি বন বিভাগের নিকট হস্তান্তর করিতে পারিবে।

(৬) চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণিকে লোকালয়ে ছাড়িয়া দেওয়া যাইবে না।

(৭) চিড়িয়াখানায় প্রজননের উদ্দেশ্যে কোনো প্রাণি সংগ্রহ করিতে হইলে সংগৃহীত প্রাণির লিঙ্গ অনুপাতে সংশ্লিষ্ট প্রাণির উৎপাদন সহায়ক হইতে হইবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে আন্তঃপ্রাণি প্রজনন করানো যাইবে।

প্রাণিজসম্পদ সংরক্ষণ

১১। (১) কিউরেটর চিড়িয়াখানায় প্রাণিজসম্পদ সংরক্ষণ ও ব্যবহার করিতে পারিবেন।

(২) কিউরেটর মৃত প্রাণির ট্রফি প্রস্তুতপূর্বক প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন।

ব্যাখ্যা: এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে,-

(ক) 'প্রাণিজসম্পদ' অর্থ জীবিত প্রাণি ব্যতীত মৃত বা জীবিত লার্ভা, ভ্রূণ, ডিম বা ডিম্বাণু, শুক্রাণু অথবা প্রাণির দেহের এমন অংশ যাহা হইতে উক্ত প্রাণি উৎপাদন কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইতে পারে; এবং

(খ) "ট্রফি" অর্থ কোনো মৃত বা আবদ্ধ বন্যপ্রাণির সম্পূর্ণ বা উহার কোনো অংশ, যাহা পরিশোধন বা প্রক্রিয়াজাত করিয়া স্বাভাবিকভাবে রাখা হয়, যেমন-

(অ) চামড়া, পশমের মোটা চাদর, সম্পূর্ণ বা আংশিক মাউন্টিং বন্যপ্রাণি অথবা ট্যাক্সিডার্মি করা অংশ; এবং

(আ) হরিণের শাখাযুক্ত শিং ও হাড়, কচ্ছপের শক্ত খোলস, শামুক ও ঝিনুকের খোল, হস্তীদন্ত, মৌচাক, পশম, পালক, নখ, দাঁত, খুর এবং ডিম।

দর্শনার্থীদের জন্য অবকাঠামোগত সুবিধাদি, নির্দেশনা, ইত্যাদি

১২। (১) দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় যাহাতে স্বাচ্ছন্দে বিনোদন উপভোগ করিতে পারেন সেইজন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুবিধাদির ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।

(২) সরকার চিড়িয়াখানাতে দর্শনার্থীদের জন্য নির্ধারিত সুবিধাদি তৈরি, নিরাপত্তা এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মহাপরিচালককে সময়ে সময়ে নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।

(৩) প্রত্যেক চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবলসহ সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জন কর্তৃক নির্ধারিত প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ও ঔষধপত্র মজুত রাখিতে হইবে।

(৪) প্রত্যেক চিড়িয়াখানায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন দর্শনার্থীদের জন্য সহায়ক অবকাঠামো ও সরঞ্জামাদি যেমন, হুইল চেয়ার চলাচল উপযোগী পথ, হুইল চেয়ার বা অনুরুপ সরঞ্জামাদির সরবরাহ এবং অনুকূল পরিবেশ থাকিতে হইবে।

প্রাণির ব্যথাহীন মৃত্যু, তদন্ত, ইত্যাদি

১৩। (১) চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণির বয়সজনিত শারীরিক অক্ষমতা বা সংক্রামক রোগ হইতে অন্য কোনো প্রাণির জীবন রক্ষার্থে বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট প্রাণির অসহনীয় ক্লেশ নিবারণের জন্য ব্যথাহীন মৃত্যু ঘটানো যাইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহাই থাকুক না কেন, ভেটেরিনারি কর্মকর্তার লিখিত নির্দেশনা বা তাঁহার উপস্থিতি ব্যতীত কোনো প্রাণির ব্যথাহীন মৃত্যু ঘটানো যাইবে না।

(৩) কোনো চিড়িয়াখানায় ব্যথাহীন মৃত্যুর মাধ্যমে কোনো প্রাণির মৃত্যু ঘটানো হইলে উক্ত প্রাণির বিস্তারিত পরিচিতি এবং ব্যথাহীন মৃত্যু ঘটানোর কারণ সংবলিত প্রতিবেদন উক্ত মৃত্যু ঘটানোর অনধিক ৭ (সাত) দিনের মধ্যে মহাপরিচালকের নিকট এবং উহার একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও জাতীয় চিড়িয়াখানায় প্রেরণ করিতে হইবে।

(৪) সরকার, প্রয়োজনবোধে চিড়িয়াখানায় ব্যথাহীন মৃত্যুর মাধ্যমে সংঘটিত প্রাণির মৃত্যু সম্পর্কে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদানের জন্য ভেটেরিনারি কর্মকর্তা, ভেটেরিনারিয়ান ও প্রাণিপুষ্টিবিদ সমন্বয়ে এক বা একাধিক তদন্ত কমিটি করিতে পারিবে এবং উক্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর মহাপরিচালককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করিতে পরিবে।

ব্যাখ্যা: "ব্যথাহীন মৃত্যু (euthanasia)" অর্থ যথাসম্ভব বিনা উৎপীড়ন ও যন্ত্রণাহীন মৃত্যু।

সঙ্গনিরোধ

১৪। (১) প্রতিটি নূতন প্রাণি সংগ্রহের পর বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে চিড়িয়াখানায় সঙ্গনিরোধ করিতে হইবে।

(২) ভেটেরিনারি কর্মকর্তা উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সঙ্গনিরোধ সময়কালে সংশ্লিষ্ট প্রাণির প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করিয়া একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবেন এবং উক্ত প্রাণির রোগ ও চিকিৎসা বিষয়ক তথ্য সংরক্ষণ করিবেন।

(৩) কিউরেটর উপ-ধারা (২) এর অধীন ভেটেরিনারি কর্মকর্তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উক্ত প্রাণি প্রদর্শন উপযোগী ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর না হইলে ক্ষেত্রমত খাঁচায় আবদ্ধ বা মুক্ত অবস্থায় প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন।

শিক্ষা বা গবেষণামূলক কার্যক্রম, শিক্ষা উপকরণ তৈরি, সদস্য পদ, ইত্যাদি

১৫। (১) কিউরেটর, মহাপরিচালকের অনুমোদনক্রমে, কোনো শিক্ষা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রাণির মৃত্যু বা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা নাই এইরূপ গবেষণা কার্যে সহায়তা প্রদান করিতে পারিবেন।

(২) কিউরেটর চিড়িয়াখানায় বিপন্ন প্রজাতির প্রাণি সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট বা বন অধিদপ্তর বা এতদসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহায়তা গ্রহণ করিতে পারিবেন।

(৩) চিড়িয়াখানায় প্রাণি সংগ্রহ, লালনপালন, কল্যাণ, চিকিৎসা, প্রজনন, সংরক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও চিড়িয়াখানার উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোগত সুবিধাদি এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে শিক্ষা উপকরণ সংগ্রহ, প্রস্তুত, প্রদর্শন ও বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।

(৪) সরকার, প্রয়োজনে চিড়িয়াখানার সুবিধাদি সম্প্রসারণ, প্রাণি বিনিময়, শিক্ষা, গবেষণা বা এতদসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যে দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য পদ গ্রহণ করিতে পারিবে।

বিনিময় বা হস্তান্তর

১৬। মহাপরিচালক কোনো চিড়িয়াখানার সংগ্রহ বৃদ্ধি ও বৈচিত্র্য আনয়নের জন্য, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, চিড়িয়াখানাসমূহের মধ্যে প্রাণি বিনিময় বা কোনো চিড়িয়াখানার অতিরিক্ত প্রাণি অন্য চিড়িয়াখানায় স্থানান্তর করিতে পারিবেন।

প্রাণি সংগ্রহের রেকর্ড সংরক্ষণ, প্রতিবেদন, ইত্যাদি

১৭। (১) কিউরেটর, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, চিড়িয়াখানায় সংগৃহীত প্রাণির জন্ম, সংগ্রহকাল, অসুস্থতা, মৃত্যু এবং এতদসংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করিবেন।

(২) মহাপরিচালক প্রতি বৎসর ৩১ মার্চের মধ্যে পূর্ববর্তী বৎসর পর্যন্ত চিড়িয়াখানায় প্রাণি সংগ্রহের তথ্য এবং পরবর্তী বৎসরের প্রাণি সংগ্রহ বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা থাকিলে উহাসহ একটি বার্ষিক প্রতিবেদন সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন।

(৩) সরকার, প্রয়োজনবোধে, কিউরেটরের নিকট হইতে যে কোনো সময় চিড়িয়াখানায় প্রাণি সংগ্রহ বা এতদসংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবেদন বা বিবরণী তলব করিতে পারিবে এবং কিউরেটর উহা সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে বাধ্য থাকিবে।

(৪) মহাপরিচালক সারাদেশে চিড়িয়াখানার তথ্যাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করিবেন এবং প্রতি বৎসর সকল চিড়িয়াখানার উপর একটি প্রতিবেদন উপদেষ্টা পরিষদের নিকট উপস্থাপন করিবেন।

চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী প্রবেশ ফি নির্ধারণ, ইত্যাদি

১৮। (১) সরকার চিড়িয়াখানায় প্রবেশের জন্য প্রবেশ ফি নির্ধারণ করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সুবিধা বঞ্চিত বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন দর্শনার্থীর চিড়িয়াখানায় প্রবেশের জন্য কোনো প্রবেশ ফি গ্রহণ করা যাইবে না।

(২) কোনো দর্শনার্থী, সরকারের ভিন্নরূপ নির্দেশনা না থাকিলে, উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্ধারিত ফি প্রদান ব্যতীত চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করিতে পারিবেন না।

প্রাণিকে আঘাত করা বা খাদ্য সরবরাহ করা নিধিদ্ধ

১৯। (১) কোনো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় কোনো প্রাণিকে উত্যক্ত করিতে অথবা কোনোভাবে আঘাত বা জখম করিতে পারিবেন না।

(২) কোনো দর্শনার্থী কিউরেটরের নির্দেশনা অমান্য করিয়া বা অনুমতি ব্যতীত চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণিকে কোনো খাদ্য সরবরাহ করিতে পারিবেন না।

প্রবেশ ফি ব্যতিত চিড়িয়াখানায় প্রবেশ বা কোনো প্রাণিকে উত্যক্ত করিবার জন্য প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণ

২০। (১) কোনো দর্শনার্থী প্রবেশ ফি প্রদান ব্যতিত চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করিলে, ঘটনাস্থলে উক্ত দর্শনার্থীর নিকট হইতে প্রবেশ ফি'র সমপরিমাণ মূল্য আদায় করা যাইবে অথবা মাত্রা বিবেচনা করিয়া অনধিক ২ (দুই) হাজার টাকা প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাইবে।

(২) কোনো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণিকে উত্যক্ত করিলে ঘটনাস্থলে উক্ত ব্যক্তির নিকট হইতে অনধিক ২ (দুই) হাজার টাকা প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাইবে।

(৩) কোনো দর্শনার্থী উপ-ধারা (২) ও উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী প্রদত্ত ক্ষতিপূরণের আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।

(৪) প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণ আদায়, ক্ষতিপূরণ আদায় পুনর্বিবেচনা ও অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

অপরাধ ও দণ্ড

২১। কোনো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণিকে কোনোভাবে আঘাত বা জখম করিলে অথবা কিউরেটরের নির্দেশনা অমান্য করিয়া বা অনুমতি ব্যতীত চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণিকে কোনো খাদ্য সরবরাহ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

অপরাধের আমলযোগ্যতা ও জামিনযোগ্যতা

২২। ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য ও জামিনযোগ্য হইবে।

অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ, তদন্ত, বিচার, ইত্যাদি

২৩। (১) কিউরেটরের লিখিত অভিযোগ ব্যতীত কোনো আদালত এই আইনের বিধান লঙ্ঘনজনিত কোনো অপরাধ বিচাবার্থ গ্রহণ করিবে না।

(২) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে ফৌজদারী কার্যবিধির Chapter XXII তে বর্ণিত পদ্ধতি, যতদূর সম্ভব, প্রযোজ্য হইবে।

(৩) এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে ফৌজদারী কার্যবিধির বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।

মোবাইল কোর্ট কর্তৃক বিচার্য

২৪। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ২১ এর অধীন সংঘটিত অপরাধ মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৯ নং আইন) এর তফসিলভুক্ত হওয়া সাপেক্ষে, মোবাইল কোর্ট কর্তৃক বিচার্য হইবে।

অসুবিধা দূরীকরণ

২৫। এই আইনের কোনো বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে আদেশ দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্তরূপ অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দূর করিতে পারিবে।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

২৬। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

রহিতকরণ ও হেফাজত

২৭। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ২৪ অক্টোবর, ২০১৮ তারিখের প্রজ্ঞাপন নং ৩৩.০১.০০০০.১১৮.০০৪.০৬-৭২৩ দ্বারা গঠিত বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা উপদেষ্টা কমিটি এতদ্দ্বারা বাতিল করা হইল এবং উক্ত কমিটি কর্তৃক কৃত সকল কার্যক্রম এই আইনের অধীন কৃত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

২৮। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।

(২) ইংরেজি পাঠ এবং মূল বাংলা পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।


Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs