প্রিন্ট

16/10/2024
প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২

প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২

( ২০১২ সনের ২৩ নং আইন )

প্রতিযোগিতা আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে প্রণীত আইন

যেহেতু দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে ব্যবসা-বাণিজ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ উৎসাহিত করিবার, নিশ্চিত ও বজায় রাখিবার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশ (Collusion) , মনোপলি (Monopoly) ও ওলিগপলি (Oligopoly) অবস্থা, জোটবদ্ধতা অথবা কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহার সংক্রান্ত প্রতিযোগিতা বিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূলের লক্ষ্যে আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

 
 

সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-

 
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২ নামে অভিহিত হইবে।
 
 
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
 
 
সংজ্ঞা
২। (১) বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্হী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
 
 
(ক) “অধিগ্রহণ (Acquisition) ” অর্থ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, ভোট প্রদানের অধিকার বা সম্পদ অধিগ্রহণ বা অধিগ্রহণের জন্য সম্মত হওয়া বা সম্পদ বা ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করা;
 
 
(খ) “অনুশীলন (Practice) ” অর্থ কোন ব্যক্তি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনুসৃত প্রচলিত রীতি;
 
 
(গ) “ওলিগপলি (Oligopoly) ” অর্থ কিছু সংখ্যক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোন পণ্য বা সেবার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে এমন কোন অবস্থা;
 
 
(ঘ) “কমিশন” অর্থ ধারা ৫ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন;
 
 
(ঙ) “কার্টেল (Cartel) ” অর্থ কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগোষ্ঠীর প্রকাশ্য বা প্রচ্ছন্ন চুক্তির মাধ্যমে কোন পণ্য বা সেবার বাজারে একচেটিয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠার জন্য পণ্যের উৎপাদন, পরিবেশন, বিক্রয়, মূল্য বা লেনদেন অথবা কোন প্রকার সেবা সীমিতকরণ, নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা বা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ গ্রহণ করা;
 
 
(চ) “চেয়ারপার্সন” অর্থ কমিশনের চেয়ারপার্সন;
 
 
(ছ) “চুক্তি” অর্থ-
 
 
(অ) Contract Act, 1872 (Act IX of 1872) এর section 2(h) এ সংজ্ঞায়িত “Contract”;
 
(আ) কোন পণ্য বা সেবার ক্রয়-বিক্রয়, উৎপাদন, সরবরাহ, বিতরণ, নিয়ন্ত্রণ বা, ক্ষেত্রমত, পণ্যের গুদামজাতকরণ বিষয়ে সমঝোতা বা ঐকমত্য, আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক, লিখিত বা অলিখিত, প্রকাশ্য বা প্রচ্ছন্ন, যাহাই হউক না কেন, এবং উহা আইনি প্রক্রিয়ায় বলবৎযোগ্য হউক বা না হউক; এবং নিম্নলিখিত বিষয়ও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথাঃ-
 
 
(১) শর্তযুক্ত ব্যবস্থা (Tie-in-arrangement);
 
 
(২) একচ্ছত্র (Exclusive) সরবরাহ চুক্তি;
 
 
(৩) একচ্ছত্র (Exclusive) পরিবেশন চুক্তি;
 
 
(৪) লেনদেনে অস্বীকার;
 
 
(৫) পুনঃবিক্রয় মূল্য সংরক্ষণ;
 
 
(জ) “জোটবদ্ধতা (Combination) ” অর্থ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অধিগ্রহণ (Acquisition) বা নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করা বা অংগীভূত বা একীভূত হওয়া (Merger);
 
(ঝ) “পণ্য (Goods) ” অর্থ Sale of Goods Act, 1930 (Act III of 1930) এর section 2(7) এ সংজ্ঞায়িত “goods”;
 
(ঞ) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;
 
 
(ট) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
 
 
(ঠ) “ব্যক্তি” অর্থ কোন ব্যক্তি এবং কোন প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী, সমিতি, অংশীদারী কারবার, ফার্ম বা সংবিধিবদ্ধ বা অন্য কোন সংস্থা বা উহাদের প্রতিনিধিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
(ড) “ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান” অর্থ এমন ব্যক্তি বা অর্থনৈতিক সত্ত্বা বা সরকারের এমন কোন বিভাগ যিনি বা যাহা যে কোন প্রকারের পণ্যের উৎপাদন, গুদামজাতকরণ, সরবরাহ, পরিবেশন, অধিগ্রহণ বা নিয়ন্ত্রণ বা সেবার সংস্থান সংক্রান্ত কোন কার্যক্রমে অথবা বিনিয়োগ বা ব্যবসা অর্জন, ধারণ, দায়গ্রহণ বা শেয়ার, ডিবেঞ্চার এবং অন্য কোন বিধিবদ্ধ সংস্থার জামানত সংক্রান্ত লেনদেনসহ অন্যান্য কার্যক্রমে সরাসরি অথবা এক বা একাধিক ইউনিটে বা বিভাগে বা অধীনস্থ (subsidiary) হিসাবে, নিয়োজিত ছিলেন বা আছেন, এইরূপ ইউনিট, বিভাগ বা অধীনস্থতা যেই স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অবস্থিত সেই স্থানে হউক বা ভিন্ন স্থানে হউক তাহাকে বুঝাইবে; তবে সরকারের মুদ্রা ও প্রতিরক্ষার সহিত সংশ্লিষ্ট এমন কোন কার্যক্রম এই সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
 
 
(ঢ) “ব্যবসা-বাণিজ্য (Trade) ” অর্থ পণ্যের উৎপাদন, সরবরাহ, পরিবেশন, গুদামজাতকরণ বা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত লেনদেন, ব্যবসা, শিল্প, পেশা বা বৃত্তি; এবং কোন সেবার সংস্থানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
 
 
 
 
(ণ) “মনোপলি (Monopoly) ” অর্থ মাত্র একজন ব্যক্তি বা একটি প্রতিষ্ঠান কোন পণ্য বা সেবার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে এমন কোন অবস্থা;
 
 
(ত) “মূল্য” অর্থ কোন পণ্য বিক্রয় কিংবা কোন সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে মূল্যবান বিনিময় (valuable exchange) , প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ বা বিলম্বিত হউক বা না হউক, এবং এমন বিনিময়ও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে যাহা কার্যতঃ কোন পণ্য বিক্রয় কিংবা সেবা প্রদানের সহিত সম্পৃক্ত কিন্তু দৃশ্যতঃ অন্য কোন বিষয় বা ঘটনার সহিত সংশ্লিষ্ট;
 
 
(থ) “ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশ (Collusion) ” অর্থ সুস্থ ও স্বাভাবিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ বিনষ্ট করে বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করার অসৎ উদ্দেশ্যে সম্পাদিত লিখিত অথবা অলিখিত চুক্তি বা সমঝোতা;
 
 
(দ) “সদস্য” অর্থ কমিশনের সদস্য;
 
 
(ধ) “সংশ্লিষ্ট বাজার” অর্থ-
 
 
(অ) পণ্যের বা সেবার বৈশিষ্ট্য, মূল্য এবং ব্যবহারের ইচ্ছার ভিত্তিতে ভোক্তা কর্তৃক বিনিময়যোগ্য বা পরিবর্তনযোগ্য সংশ্লিষ্ট পণ্য বা সেবার বাজার;
 
 
(আ) কোন এলাকা সমন্বয়ে গঠিত বাজার যাহাতে পণ্য সরবরাহ বা সেবা সংস্থান বা পণ্য বা সেবার চাহিদার জন্য প্রতিযোগিতার শর্তাবলী অভিন্ন এবং প্রতিবেশী এলাকায় বিরাজমান শর্তবলী হইতে পৃথক;
 
 
(ন) “সেবা” অর্থ যে কোন প্রকারের সেবা যাহা সম্ভাব্য ব্যবহারকারীর জন্য প্রাপ্তিসাধ্য (available) করা হইয়াছে; এবং কোন শিল্প বা বাণিজ্যিক বিষয় সংক্রান্ত ব্যবসার সহিত সংশ্লিষ্ট সেবার সংস্থানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
 
 
(২) এই আইনে ব্যবহৃত যে সকল শব্দ বা অভিব্যক্তির সংজ্ঞা দেওয়া হয় নাই সে সকল শব্দ বা অভিব্যক্তি কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এ যেই অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে প্রযোজ্য হইবে।
 
 
প্রয়োগ
৩। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোন পণ্য বা সেবার ক্রয়-বিক্রয়, উৎপাদন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ক্ষেত্রমত, পণ্যের গুদামজাতকরণের সহিত সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য হইবে।
 
 
আইনের প্রয়োগ হইতে অব্যাহতি
৪। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং বেসরকারি খাতের জন্য উন্মুক্ত নহে এমন পণ্য এবং সেবা এই আইনের আওতা বহির্ভূত থাকিবে।
 
 
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন প্রতিষ্ঠা
৫। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর, যতশীঘ্র সম্ভব, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন নামে একটি কমিশন প্রতিষ্ঠা করিবে।
 
 
(২) কমিশন একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহার পক্ষে ইহা মামলা দায়ের করিতে পারিবে বা ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
 
 
(৩) কমিশনের একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে, যাহা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত আকৃতির এবং বিবরণ সম্বলিত হইবে; উহা চেয়ারপার্সনের হেফাজতে থাকিবে এবং কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হইবে।
 
 
কমিশনের কার্যালয়
৬। কমিশনের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে এবং কমিশন, প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোন স্থানে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
কমিশন গঠন
৭। (১) কমিশন এক (১) জন চেয়ারপার্সন এবং অনধিক চার (৪) জন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে।
 
 
(২) চেয়ারপার্সন ও সদস্যগণ, উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে, সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহাদের চাকুরীর অন্যান্য শর্তাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
(৩) অর্থনীতি, বাজার সম্পর্কিত বিষয় বা জন প্রশাসন বা অনুরূপ যে কোন বিষয় বা আইন পেশায় কিংবা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইন বিষয়ক কর্মকাণ্ডে অথবা সরকারের বিবেচনায় কমিশনের জন্য প্রয়োজনীয় অন্য কোন বিষয়ে ১৫ (পনের) বৎসরের বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি কমিশনের চেয়ারপার্সন বা সদস্য হিসাবে নিয়োগ লাভের যোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইবেনঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, একই বিষয়ে অভিজ্ঞ একাধিক ব্যক্তিকে সদস্য হিসাবে নিয়োগ করা যাইবে না।
 
 
(৪) চেয়ারপার্সন এবং সদস্যগণ কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য হইবেন এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কমিশন সরকারের নিকট দায়ী থাকিবে।
 
 
(৫) চেয়ারপার্সন কমিশনের প্রধান নির্বাহী হইবেন।
 
 
(৬) চেয়ারপার্সন এবং সদস্যগণ তাহাদের কার্যভার গ্রহণের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর মেয়াদের জন্য স্ব স্ব পদে বহাল থাকিবেন এবং অনুরূপ একটিমাত্র মেয়াদের জন্য পুনঃ নিয়োগের যোগ্য হইবেনঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যক্তির বয়স ৬৫ (পঁয়ষট্টি) বৎসর পূর্ণ হইলে তিনি চেয়ারপার্সন বা সদস্য পদে নিযুক্ত হইবার যোগ্য হইবেন না বা চেয়ারপার্সন বা সদস্য পদে বহাল থাকিবেন না।
 
 
 
 
(৭) উপ-ধারা (৬) এর অধীন তাহাদের চাকুরীর নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে চেয়ারপার্সন বা কোন সদস্য যে কোন সময় সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে অন্যূন ৩ (তিন) মাসের অগ্রীম নোটিশ প্রদান করিয়া স্ব স্ব পদ ত্যাগ করিতে পারিবেনঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার কর্তৃক পদত্যাগ গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত চেয়ারপার্সন বা, ক্ষেত্রমত, সদস্য স্ব স্ব কার্য চালাইয়া যাইবেন।
 
 
 
 
(৮) চেয়ারপার্সনের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে চেয়ারপার্সন তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, নবনিযুক্ত চেয়ারপার্সন তাহার পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা চেয়ারপার্সন পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত জ্যেষ্ঠতম সদস্য চেয়ারপার্সন পদের দায়িত্ব পালন করিবেন।
 
 
 
 
(৯) চেয়ারপার্সন বা কোন সদস্য মৃত্যুবরণ বা উপ-ধারা (৭) এর বিধান অনুসারে স্বীয় পদ ত্যাগ করিলে বা অপসারিত হইলে, সরকার উক্ত পদ শূন্য হইবার, ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, কোন উপযুক্ত ব্যক্তিকে শূন্য পদে নিয়োগদান করিবেন।
 
 
কমিশনের দায়িত্ব, ক্ষমতা ও কার্যাবলী
৮।(১) কমিশনের দায়িত্ব, ক্ষমতা ও কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথাঃ-
 
 
(ক) বাজারে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব বিস্তারকারী অনুশীলনসমূহকে নির্মূল করা, প্রতিযোগিতাকে উৎসাহিত করা ও বজায় রাখা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করা;
 
 
(খ) কোন অভিযোগের ভিত্তিতে অথবা স্ব-প্রণোদিতভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিযোগিতা বিরোধী সকল চুক্তি, কর্তৃত্বময় অবস্থান এবং অনুশীলনের তদন্ত করা;
 
 
(গ) ধারা ১৮ এর প্রাসংগিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া এই আইনে উল্লিখিত অন্যান্য অপরাধের তদন্ত পরিচালনা এবং উহার ভিত্তিতে মামলা দায়ের ও পরিচালনা করা;
 
 
(ঘ) জোটবদ্ধতা এবং জোটবদ্ধতা সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি, জোটবদ্ধতার জন্য তদন্ত সম্পাদনসহ জোটবদ্ধতার শর্তাদি এবং জোটবদ্ধতা অনুমোদন বা নামঞ্জুর সংক্রান্ত বিষয়াদি নির্ধারণ করা;
 
 
(ঙ) প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত বিধিমালা, নীতিমালা, দিক নির্দেশনামূলক পরিপত্র বা প্রশাসনিক নির্দেশনা প্রণয়ন এবং উহা বাস্তবায়নে সরকারকে পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা;
 
 
(চ) প্রতিযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডের উন্নয়ন এবং প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য উপযুক্ত মানদণ্ড নির্ধারণ করা;
 
 
(ছ) সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর লোকজনের মধ্যে প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত সার্বিক বিষয়ে প্রচার এবং প্রকাশনার মাধ্যমে ও অন্যান্য উপায়ে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচী গ্রহণ করা;
 
 
 
 
(জ) প্রতিযোগিতা বিরোধী কোন চুক্তি বা কর্মকাণ্ড বিষয়ে গবেষণা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ এবং অনুরূপ অন্যবিধ ব্যবস্থার মাধ্যমে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রকাশ ও প্রচার করা এবং উহাদের কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ করা;
 
 
(ঝ) সরকার কর্তৃক প্রেরিত প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত যে কোন বিষয় প্রতিপালন, অনুসরণ বা বিবেচনা করা;
 
 
(ঞ) ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও বাস্তবায়নের বিষয়ে অন্য কোন আইনের অধীন গৃহীত ব্যবস্থাদি পর্যালোচনা করা;
 
 
(ট) এই ধারার অধীন দায়িত্ব পালনের জন্য বা ইহার কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের প্রয়োজনে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বিদেশী কোন সংস্থার সহিত কোন চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর ও সম্পাদন করা;
 
 
(ঠ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ফিস, চার্জ বা অন্য কোন খরচ ধার্য করা; এবং
 
 
(ড) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য যে কোন কার্য করা।
 
 
(২) কমিশন স্ব-প্রণোদিত হইয়া অথবা কোন অভিযোগের ভিত্তিতে এই আইনের অধীন উত্থাপিত অভিযোগ সম্পর্কে অনুসন্ধান করিতে পারিবে।
 
 
(৩) নিম্নবর্ণিত বিষয়ে Code of Civil Procedure, 1908 (Act V of 1908) এর অধীন একটি দেওয়ানী আদালত যে ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে কমিশন বা, ক্ষেত্রমত, চেয়ারপার্সন বা কোন সদস্যও এই ধারার অধীন সেইরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন, যথাঃ-
 
 
(ক) কোন ব্যক্তিকে কমিশনে হাজির করিবার জন্য নোটিশ জারী করা ও উপস্থিতি নিশ্চিত করা;
 
 
(খ) কোন দলিল উদঘাটন ও উপস্থাপন করা;
 
 
(গ) তথ্য যাচাই ও পরিদর্শন করা;
 
 
(ঘ) কোন অফিস হইতে প্রয়োজনীয় কাগজাদি বা উহার অনুলিপি তলব করা;
 
 
(ঙ) সাক্ষীর জিজ্ঞাসাবাদ এবং দলিল পরীক্ষা করিবার জন্য নোটিশ জারী করা;
 
 
(চ) এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে যে কোন বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
 
 
(৪) কমিশন যে কোন ব্যক্তিকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোন তথ্য সরবরাহ করিবার জন্য তাহার হেফাজতে বা নিয়ন্ত্রণে থাকা এইরূপ কোন বই, হিসাব বা অন্যান্য দলিল, যাহা বাণিজ্যিক লেনদেনের সহিত সংশ্লিষ্ট এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরীক্ষা করা আবশ্যক, উক্তরূপ বিষয়াদি কমিশন বা তদ্‌কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার নিকট উপস্থাপন করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং অনুরূপভাবে নির্দেশিত ব্যক্তি তাহার হেফাজতে রক্ষিত উক্ত তথ্য সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
 
 
(৫) কমিশন কোন তদন্ত বা কার্যধারা পরিচালনার ক্ষেত্রে উহাকে সহায়তা প্রদানের জন্য অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, হিসাববিজ্ঞান অথবা অন্য কোন ক্ষেত্র হইতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে এবং উক্তরূপ সহায়তা প্রদানের জন্য কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করিবেন।
 
 
(৬) কমিশনের সম্মুখে সকল কার্যধারা Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860) এর section 196 এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এবং section 193 এবং 228 এর অধীন বিচারিক কার্যধারা বলিয়া গণ্য হইবে, এবং Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) এর chapter 35 এবং section 195 এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কমিশন একটি দেওয়ানী আদালত (Civil Court) বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
(৭) চেয়ারপার্সন বা কমিশন হইতে বৈধ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তাকে উপ-ধারা (৩) এর অধীন ক্ষমতা প্রয়োগে কোন ব্যক্তি বাধা প্রদান করিলে বা উক্ত উপ-ধারার অধীন প্রদত্ত কোন নির্দেশ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ব্যক্তি অমান্য করিলে উহা এই আইনের অধীন একটি দণ্ডনীয় অপরাধ হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ৩(তিন) বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের কারাদণ্ডে বা অর্থদণ্ডে বা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
 
চেয়ারপার্সন ও সদস্যের অপসারণ
৯। (১) সরকার চেয়ারপার্সন বা কোন সদস্যকে তাহার পদ হইতে নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক কারণে অপসারণ করিতে পারিবেন, যদি তিনি-
 
 
(ক) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হন;
 
 
(খ) পারিশ্রমিকের বিনিময়ে স্বীয় দায়িত্ব বহির্ভূত অন্য কোন পদে নিয়োজিত হন;
 
 
(গ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত হন;
 
 
(ঘ) নৈতিক স্থলনজনিত কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন;
 
 
(ঙ) শারীরিক বা মানসিকভাবে তাহার দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন; বা
 
 
(চ) সরকারের বিবেচনায় তাহার পদমর্যাদার এইরূপ অপব্যবহার করিয়া থাকেন, যাহাতে তাহার উক্ত পদে বহাল থাকা জনস্বার্থের পরিপন্থী।
 
 
 
 
(২) চেয়ারপার্সন বা কোন সদস্যকে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসংগত সুযোগ না দিয়া উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না।
 
 
 
চেয়ারপার্সন ও সদস্যগণের পদমর্যাদা, পারিশ্রমিক ও সুবিধাদি
১০। চেয়ারপার্সন ও সদস্যগণের পদমর্যাদা, পারিশ্রমিক, ভাতা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
কমিশনের সভা
১১। (১) এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, কমিশন উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) প্রতি ৪ (চার) মাসে কমিশনের কমপক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে এবং সভার তারিখ, সময় ও স্থান চেয়ারপার্সন কর্তৃক নির্ধারিত হইবেঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কমিশন, বিশেষ প্রয়োজনে, যে কোন সময় উহার জরুরী সভা আহবান করিতে পারিবে।
 
 
(৩) চেয়ারপার্সন কমিশনের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে উপস্থিত সদস্যবৃন্দ কর্তৃক নির্বাচিত কোন সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
 
 
(৪) চেয়ারপার্সন এবং অন্যূন ২(দুই) জন সদস্যের উপস্থিতিতে কমিশনের সভার কোরাম গঠিত হইবে।
 
 
(৫) কমিশনের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে চেয়ারপার্সন এবং প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের অধিকার থাকিবে।
 
 
(৬) শুধুমাত্র কোন সদস্যপদে শূন্যতা বা কমিশন গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে কমিশনের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
 
 
(৭) প্রত্যেক সভার কার্যবিবরণী সভার সভাপতি কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইতে হইবে এবং উক্ত সভার পরবর্তী ২০(বিশ) দিনের মধ্যে উহার একটি কপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
 
 
কমিশনের সচিব, কর্মকর্তা ও কর্মচারী, ইত্যাদি
১২। (১) কমিশনের একজন সচিব থাকিবেন, যিনি সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হইবেন এবং তাহার চাকুরীর শর্তাদি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
 
 
(২) এই আইনের অধীন কমিশন উহার কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
(৩) কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন, ভাতা ও চাকুরীর অন্যান্য শর্তাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবেঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, কমিশনের অনুরোধক্রমে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে কমিশনে প্রেষণে নিয়োগ করিতে পারিবে।
 
 
চেয়ারপার্সন এবং সদস্যদের কার্যভার ত্যাগ করার পর কতিপয় নিয়োগের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ
১৩। চেয়ারপার্সন এবং কোন সদস্য তাহার কার্যভার ত্যাগ করার ১(এক) বৎসর সময়ের মধ্যে এমন কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত হইতে পারিবেন না বা এমন কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসন বা ব্যবস্থাপনার সহিত সম্পৃক্ত হইতে পারিবেন না, যাহা এই আইনের অধীন কমিশনের সম্মুখে কোন কার্যধারার পক্ষ ছিল বা আওতায় আসিতে পারে।
কমিশন এবং সংবিধিবদ্ধ সংস্থার মধ্যে মতামত বিনিময়
১৪। (১) কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থার কার্যক্রম বা উক্ত সংস্থা কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এই আইনের কোন বিধানের সহিত সাংঘর্ষিক হইতে পারে মর্মে কোন ব্যক্তি আপত্তি উত্থাপন করিলে বা উক্ত সংবিধিবদ্ধ সংস্থা স্বীয় উদ্যোগে উক্ত কার্যক্রমের উপর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উক্ত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা স্থগিত রাখিয়া উত্থাপিত আপত্তিটি কমিশন বরাবরে প্রেরণ করিতে পারিবে।
 
 
(২) কমিশন উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত বিষয় কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইতে প্রাপ্তির পর অনূর্ধ্ব ৬০(ষাট) দিনের মধ্যে উহার মতামত উক্ত সংবিধিবদ্ধ সংস্থার নিকট প্রেরণ করিবে এবং উক্ত সংস্থা মতামতটি বিবেচনাক্রমে উহার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে বা চলমান কার্যক্রম পরিচালনা করিবে।
 
 
(৩) কমিশনে কোন কার্যক্রম চলাকালে কমিশন কর্তৃক গৃহীত বা প্রস্তাবিত সিদ্ধান্ত এই আইনের কোন বিধানের পরিপন্থী বা পরিপন্থী হইতে পারে এবং যাহার বাস্তবায়ন কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থার উপর ন্যস্ত মর্মে কোন ব্যক্তি আপত্তি উত্থাপন করিলে বা কমিশন স্বীয় উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উক্ত কার্যক্রমের উপর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উক্ত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা স্থগিত রাখিয়া উক্ত সংবিধিবদ্ধ সংস্থার মতামতের জন্য প্রেরণ করিতে পারিবে।
 
 
(৪) কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত বিষয় কমিশন হইতে প্রাপ্তির পর অনূর্ধ্ব ৬০(ষাট) দিনের মধ্যে উহার মতামত কমিশনের নিকট প্রেরণ করিবে এবং কমিশন মতামতটি বিবেচনাক্রমে উহার আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে বা চলমান কার্যক্রম পরিচালনা করিবে।
 
 
(৫) উপ-ধারা (২) বা ক্ষেত্রমত, উপ-ধারা (৪) এর অধীন কমিশন বা ক্ষেত্রমত, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা কর্তৃক প্রাপ্ত মতামত বিবেচনা করিবার লক্ষ্যে, প্রয়োজনে, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা ও কমিশন সম্মতির ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করিয়া বিষয়টি যথাযথ আইন অনুসরণক্রমে নিষ্পত্তি করিবে।
 
 
প্রতিযোগিতা বিরোধী চুক্তি
১৫। (১) কোন ব্যক্তি কোন পণ্য বা সেবার উৎপাদন, সরবরাহ, বিতরণ, গুদামজাতকরণ বা অধিগ্রহণ সংক্রান্ত এমন কোন চুক্তিতে বা ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশে (Collusion) , প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, আবদ্ধ হইতে পারিবে না যাহা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে বা বিস্তারের কারণ ঘটায় কিংবা বাজারে মনোপলি (Monopoly) অথবা ওলিগপলি (Oligopoly) অবস্থার সৃষ্টি করে ।
 
 
 
 
(২) কোন চুক্তি, অভিন্ন বা সাদৃশ্য পণ্য লেনদেন বা সেবার সংস্থানের সহিত সম্পৃক্ত কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তি সংঘের অনুশীলন বা সিদ্ধান্ত পণ্যের বা সেবার বাজারে প্রতিযোগিতার পরিপন্থী বা বিরূপ বলিয়া বিবেচিত হইবে যদি উহা কোন পন্য বা সেবার-
 
 
(ক) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে-
 
 
 
 
(অ) ক্রয় বা বিক্রয় মূল্য অস্বাভাবিকভাবে নির্ধারণ করে; বা
 
 
(আ) দরপত্রসহ সকল ক্ষেত্রে জালিয়াতিপূর্বক প্রতারণামূলক দর নির্ধারণ করে;
 
 
(খ) উৎপাদন, সরবরাহ, বাজার, কারিগরি উন্নয়ন, বিনিয়োগ বা সেবার সংস্থানকে সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করে; অথবা
 
 
(গ) শ্রেণীর ভিত্তিতে, উৎপাদনের উৎস বা সেবার সংস্থানকে ভৌগোলিক বাজার ভিত্তিতে বা বাজারে ভোক্তার সংখ্যার ভিত্তিতে বা একইরূপে অন্য কোনভাবে বিভক্ত করে।
 
 
ব্যাখ্যা- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ‘দরপত্র জালিয়াতি’ অর্থ এমন কোন চুক্তি যাহা দর প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতাকে হ্রাস করে বা দর প্রক্রিয়াকে প্রতিকূলভাবে প্রভাবিত করে চুক্তিভুক্ত পক্ষসমূহের বা, ক্ষেত্রমত, সুবিধাভোগীর মধ্যে সুবিধাজনক অবস্থান তৈরী করে।
 
 
(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নিম্নলিখিত ব্যবস্থা বা চুক্তিসমূহও প্রতিযোগিতা বিরোধী চুক্তি হিসাবে গণ্য হইবে, যদি উহারা প্রতিযোগিতায় বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে, যথাঃ-
 
 
(ক) “শর্তযুক্ত ব্যবস্থা” অর্থাৎ কোন বিক্রেতার নিকট হইতে পণ্য ক্রয়ের শর্ত হিসাবে তদ্‌কর্তৃক বা তদ্‌দ্বারা নিয়োজিত অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান হইতে ক্রেতা কর্তৃক অন্য কোন পণ্য ক্রয় বা সুবিধাদি গ্রহণ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা বা সম্মত বিষয়াদি;
 
 
(খ) “একচ্ছত্র সরবরাহ চুক্তি” অর্থাৎ বিক্রেতা ভিন্ন অন্য কোন ব্যক্তির নিকট হইতে পণ্য অর্জন বা অন্য কোন উপায়ে পণ্য লেনদেনের ক্ষেত্রে যে কোন উপায়ে ক্রেতার উপর বিধিনিষেধ আরোপ সংক্রান্ত কোন চুক্তি;
 
 
(গ) “একচ্ছত্র পরিবেশন চুক্তি” অর্থাৎ কোন পণ্য সরবরাহ বা উৎপন্ন দ্রব্যের পরিমাণকে সীমিত, সীমাবদ্ধ বা স্থগিত করে বা কোন এলাকা বা বাজারকে কোন পণ্য বিক্রয় বা হস্তান্তরের জন্য নির্দিষ্ট করে এমন কোন চুক্তি;
 
 
(ঘ) “লেনদেনে অস্বীকার” অর্থাৎ যাহার নিকট পণ্য বিক্রয় করা হইয়াছে বা যাহার নিকট হইতে পণ্য ক্রয় করা হইয়াছে তাহাকে বা তাহার কোন শ্রেণীকে, যে কোন উপায়ে তাহার ক্রয় বা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে, সীমাবদ্ধ করে এমন যে কোন চুক্তি;
 
 
(ঙ) “পুনঃবিক্রয় মূল্য সংরক্ষণ” অর্থাৎ এমন কোন চুক্তি যাহাতে এমন শর্ত থাকে যে, ক্রেতা কর্তৃক কোন পণ্য পুনঃবিক্রয়কালে যে মূল্য ধার্য করা হইবে উহাই বিক্রেতা কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য হইবে, যদি না ইহা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে যে উক্তরূপ মূল্য অপেক্ষা কম মূল্য নির্ধারণ করা যাইতে পারে।
 
 
(৪) উপ-ধারা (১) এর কোন কিছুই-
 
 
(ক) অধিকার লংঘন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির অধিকার অথবা মেধাস্বত্ব (Intellectual property) সংক্রান্ত কোন আইনের অধীন কোন ব্যক্তির কোন অধিকার সংরক্ষণের জন্য, প্রয়োজনবোধে, যুক্তিসংগত শর্তারোপের; এবং
 
 
(খ) একচ্ছত্রভাবে পণ্য উৎপাদন, সরবরাহ, পরিবেশন অথবা নিয়ন্ত্রণ বা সেবার সংস্থান সংক্রান্ত কোন চুক্তিতে যেই পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করিবার বিধান রহিয়াছে সেই পরিমাণ পণ্য বাংলাদেশ হইতে রপ্তানি করিবার অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করিবে না।
 
কর্তৃত্বময় (Dominant) অবস্থানের অপব্যবহার
১৬। (১) কর্তৃত্বময় হিসাবে গণ্য কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইহার কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহার করিতে পারিবে না।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহার বলিয়া গণ্য হইবে, যদি কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-
 
 
(ক) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে বা সেবা প্রদানে অন্যায্য বা বৈষম্যমূলক শর্তারোপ করে বা পণ্য ও সেবার ক্রয়-বিক্রয়ে বৈষম্যমূলক মূল্য বা কৃত্রিমভাবে হ্রাসকৃত মূল্য (Predatory price) নির্ধারণ করে;
 
 
(খ) পণ্যের উৎপাদন বা সেবার সংস্থান বা উহাদের বাজারকে বা পণ্য বা সেবা সংক্রান্ত ভোক্তার পূর্ব ধারণাগত কারিগরি বা বৈজ্ঞানিক উন্নয়নকে সীমিত বা বাঁধাগ্রস্ত করে;
 
 
(গ) এমন কোন অনুশীলন অবলম্বন করে ও অব্যাহত রাখে, যাহা বাজারে অন্যদের প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করে;
 
 
(ঘ) কোন চুক্তির সম্পাদন অন্য পক্ষের এমন সম্পূরক দায়-দায়িত্ব গ্রহণ সাপেক্ষে করে, যাহা উহাদের প্রকৃতি বা বাণিজ্যিক অনুশীলন অনুযায়ী উক্তরূপ চুক্তির বিষয়বস্তুর সহিত জড়িত নহে; বা
 
 
(ঙ) সংশ্লিষ্ট একটি বাজারে উহার কর্তৃত্বময় অবস্থানকে সংশ্লিষ্ট অন্য বাজারে প্রবেশের জন্য অথবা সংশ্লিষ্ট অন্য বাজারকে নিরাপদ রাখিবার জন্য ব্যবহার করে ।
 
 
ব্যাখ্যা-এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে,-
 
 
(অ) ‘কর্তৃত্বময় অবস্থান (Dominant position) অর্থ সংশ্লিষ্ট কোন বাজারে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ভোগকৃত এমন সুদৃঢ় অবস্থান, যাহা উহাকে-
 
 
(১) সংশ্লিষ্ট বাজারে বিরাজমান প্রতিযোগী শক্তিসমূহের প্রভাব ব্যতিরেকে স্বাধীনভাবে পরিচালনা করিতে; অথবা
 
 
(২) ইহার প্রতিদ্বন্দ্বী, ভোক্তা বা সংশ্লিষ্ট বাজারকে ইহার অনুকূলে প্রভাব বিস্তার করিতে সক্ষমতা প্রদান করে;
 
 
(আ) ‘কৃত্রিমভাবে হ্রাসকৃত মূল্য (Predatory price) ’ অর্থ প্রতিযোগিতাকে হ্রাস বা নির্মূল করিবার উদ্দেশ্যে কোন পণ্যের উৎপাদন বা সেবার সংস্থানের খরচ অপেক্ষা কম মূল্যে কোন পণ্য বিক্রয় বা কোন সেবার সংস্থার করা।
তদন্ত পূর্ববর্তী কার্যক্রম
১৭। কোন চুক্তি, কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহার বা জোটবদ্ধতা সংশ্লিষ্ট বাজারে প্রতিযোগিতার উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রতিকূল প্রভাব ফেলে বা প্রভাব ফেলিবার কারণ ঘটায় এবং ভোক্তার এবং বাজারে প্রতিযোগিদের স্বার্থ রক্ষার্থে উহা অবিলম্বে প্রতিরোধ করা কমিশনের নিকট প্রয়োজন বলিয়া বিবেচিত হইলে কমিশন সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে শুনানীর যুক্তিসঙ্গত সময় প্রদান করিয়া এই আইনের অধীন তদন্ত পরিচালনার পূর্বেই উহা প্রয়োজনীয় নির্দেশনাসহ নিষ্পত্তি বা মীমাংসা করিতে পারিবে।
তদন্ত, ইত্যাদি
১৮। –(১) কমিশনের নিকট যদি যুক্তিসঙ্গতভাবে বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, কোন প্রতিষ্ঠান এমন চুক্তি করিয়াছে বা কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহার করিয়াছে যাহা সংশ্লিষ্ট বাজারের জন্য ক্ষতিকর, তাহা হইলে কমিশন স্বপ্রণোদিতভাবে বা কাহারও নিকট হইতে কোন অভিযোগ প্রাপ্ত হইয়া উহার তদন্ত করিতে পারিবে।
 
 
(২) কমিশন উপ-ধারা (১) এর অধীন তদন্ত পরিচালনার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
 
 
 
 
অন্তবর্তীকালীন আদেশ জারীর ক্ষমতা
১৯। ১) কমিশন তদ্কর্তৃক তদন্ত পরিচালনাকালে যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোন ব্যক্তি ধারা ১৫ এর উপ-ধারা (১) বা ধারা ১৬ এর উপ-ধারা (১) বা ধারা ২১ এর বিধান লংঘন করিয়াছে, যাহা এই আইনের অধীন একটি অপরাধ, এবং উক্ত অপরাধ অব্যাহত রাখা হইয়াছে বা অনুরূপ লংঘন করা হইতে পারে, সেইক্ষেত্রে কমিশন, কার্যক্রমের গুরুত্ব বিবেচনাক্রমে পক্ষগণকে শুনানীর পর্যাপ্ত সুযোগ প্রদান করিয়া, আদেশ দ্বারা, তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত বা পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারীর মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তিকে উক্ত কার্য করা হইতে, এক বা একাধিক পক্ষের, দৈনন্দিন কাজ-কর্মসহ, অপূরণীয় ক্ষতি না হয় এইরূপ শর্ত সাপেক্ষে, বিরত রাখিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
 
 
(২) কোন অন্তবর্তীকালীন আদেশের সময়সীমা নিম্নবর্ণিত সময়ের অতিরিক্ত বর্ধিত করা যাইবে না-
 
 
(ক) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত লংঘনের অভিযোগ এর বিষয়ে শুনানী সমাপ্ত হওয়া পর্যন্ত; বা
 
 
(খ) আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে অনূর্ধ্ব ৬০ (ষাট) দিনঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কমিশনের মতামতের প্রেক্ষিতে উক্ত সময়সীমা আরো অতিরিক্ত ৬০ (ষাট) দিন বর্ধিত করা যাইবে।
 
 
(৩) কমিশন কর্তৃক অন্তবর্তীকালীন আদেশ জারীর অনূর্ধ্ব ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে যে কোন পক্ষ আপীল করিতে পারিবে।
 
 
(৪) আপীল এবং আপীল কার্যক্রমের মেয়াদ যাহাই থাকুক না কেন, আপীল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোন ভিন্নরূপ নির্দেশনা না থাকিলে উক্ত অন্তবর্তীকালীন আদেশ পক্ষগণের উপর বলবৎ এবং কার্যকর থাকিবে।
 
 
তদন্ত পরবর্তী কার্যক্রম
২০। ধারা ১৮ এ উল্লিখিত পদ্ধতিতে তদন্তের পর কমিশনের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোন ব্যক্তি প্রতিযোগিতা বিরোধী চুক্তি সম্পাদন বা কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহার করিয়াছে তাহা হইলে কমিশন নিম্নবর্ণিত যে কোন এক বা একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে, যথাঃ-
 
 
(ক) উক্তরূপ চুক্তির সহিত সংশ্লিষ্ট বা কর্তৃত্বময় ক্ষমতার অপব্যবহারকারী কোন ব্যক্তিকে-
 
 
(অ) তাহার কার্যক্রম বন্ধ রাখাসহ পুনরায় উক্তরূপ চুক্তিতে আবদ্ধ না হইতে এবং উক্তরূপ কর্তৃত্বময় ক্ষমতার অপব্যবহার না করিতে নির্দেশ প্রদান করা; এবং
 
 
(আ) তাহার বিগত ৩ (তিন) অর্থ বৎসরের গড় টার্নওভারের ১০% এর বেশী নহে, কমিশনের বিবেচনায় উপযুক্ত যে কোন পরিমাণ প্রশাসনিক আর্থিক জরিমানা আরোপ করা;
 
 
(খ) ধারা ১৫ এ উল্লিখিত চুক্তির আওতায় কোন কার্টেল সংঘটিত হইলে উক্ত কার্টেল-এ অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তিকে উক্তরূপ চুক্তির ফলে অর্জিত মুনাফার ৩ (তিন) গুণ অথবা বিগত ৩ (তিন) অর্থ বৎসরের গড় টার্নওভারের ১০%, যাহা বেশী হয়, এইরূপ প্রশাসনিক আর্থিক জরিমানা আরোপ করা;
 
 
(গ) দফা (ক) এবং (খ) তে উল্লিখিত পরিমাণ আর্থিক জরিমানা প্রদানে কোন ব্যক্তি ব্যর্থ হইলে প্রতিদিনের ব্যর্থতার জন্য অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থ দণ্ড প্রদান করা;
 
 
(ঘ) কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহারের জন্য ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের বিভাজনসহ প্রতিযোগিতা সংরক্ষণের জন্য যথাযথ বিবেচিত যে কোন আদেশ প্রদান করা।
 
 
ব্যাখ্যা।– এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে “টার্নওভার” অর্থ কোন ব্যক্তি কর্তৃক কোন নির্দিষ্ট সময়ে তাহার দ্বারা প্রস্তুতকৃত বা উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহ বা সেবা প্রদান হইতে প্রাপ্য বা প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ।
 
 
জোটবদ্ধতা (Combination) নিষিদ্ধকরণ
২১। –(১) পণ্য বা সেবার বাজারে এমন জোটবদ্ধতা যাহা প্রতিযোগিতাকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করিবার কারণ ঘটায় সেইরূপ জোটবদ্ধতা নিষিদ্ধ হইবেঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, প্রতিযোগিতাকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করিবে না বা করিবার কারণ ঘটাইবে না, এমন জোটবদ্ধতা আবেদনের ভিত্তিতে কমিশন তদন্তপূর্বক অনুমোদন করিতে পারিবে এবং জোটবদ্ধতার জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন প্রয়োজন হইবে, তাহা প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত জোটবদ্ধতার বিষয়ে কমিশন প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত আবেদন ও পদ্ধতিতে অনুসন্ধান বা তদন্ত করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ তদন্ত বা অনুসন্ধান করিবার পর কমিশন যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোন জোটবদ্ধতা প্রতিযোগিতার উপর-
 
 
(ক) কোনরূপ বিরুপ প্রভাব ফেলিবে না বা প্রভাব ফেলিবার কারণ ঘটাইবে না, তাহা হইলে কমিশন আদেশ দ্বারা উক্তরূপ জোটবদ্ধতা অনুমোদন করিতে পারিবে; বা
 
 
(খ) বিরুপ প্রভাব ফেলিবে বা প্রভাব ফেলিবার কারণ ঘটাইবে, তাহা হইলে কমিশন উক্তরূপ জোটবদ্ধতা অনুমোদন করিবে না।
 
 
বাংলাদেশের বাহিরে সম্পাদিত কাজের তদন্ত কর্মকাণ্ডে প্রযোজ্যতা
২২। বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থানকারী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সংঘটিত প্রতিযোগিতা বিরোধী কোন কর্মকান্ড যদি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট বাজারের প্রতিযোগিতায় বিরূপ প্রভাব ফেলে, তাহা হইলে উভয় দেশের জন্য প্রযোজ্য আইন, বিধি, ইত্যাদি অনুসারে কমিশন উক্ত কর্মকাণ্ডের তদন্ত করিতে পারিবে।
কমিশনের সম্মুখে উপস্থিত হওয়া
২৩। কোন ব্যক্তি নিজে বা তদ্‌কর্তৃক মনোনীত কোন প্রতিনিধি কমিশনের নিকট তাহার বক্তব্য বা অভিযোগ বা প্রতিবাদের বিষয় উত্থাপন করিতে পারিবেন।
কমিশনের আদেশ লংঘন, ইত্যাদি
২৪। যদি কোন ব্যক্তি যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত এই আইনের অধীন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত কোন আদেশ বা নির্দেশনা, আরোপিত কোন শর্ত বা বিধিনিষেধ বা প্রদত্ত কোন অনুমোদন লংঘন করে তাহা হইলে উহা এই আইনের অধীন একটি অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ডে বা প্রতিদিনের ব্যর্থতার জন্য অনধিক ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থ দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
 
 
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ ও বিচার
২৫। (১) কমিশন বা কমিশনের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতীত কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন মামলা বিচারার্থ গ্রহণ করিবে না।
 
 
(২) এই আইনের অধীন অপরাধ প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা, ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।
 
 
 
 
ফৌজদারী কার্যবিধির প্রয়োগ
২৬।(১) এই আইন, তদধীন প্রণীত বিধি ও প্রবিধান সাপেক্ষে, এই আইনে বর্ণিত যে কোন অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপীল এবং আনুষঙ্গিক সকল বিষয়ে ফৌজদারী কার্যবিধি প্রযোজ্য হইবে।
 
 
(২) এই আইনের অধীন কমিশন কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার রিপোর্টের ভিত্তিতে সূচিত মামলা ফৌজদারী কার্যবিধির অধীন পুলিশ রিপোর্টের ভিত্তিতে সূচিত মামলা বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
দ্বিতীয়বার বিচার নিষিদ্ধ
২৭। এই আইনের অধীন প্রশাসনিক বা অন্যবিধ দণ্ডনীয় কোন অপরাধে কোন ব্যক্তিকে আইনের বিধান অনুসারে বিচার করিয়া দোষী বা নির্দোষ সাব্যস্ত করা হইলে, তাহাকে উক্ত একই অপরাধের জন্য পুনরায় অন্য কোন আইনের অধীন বিচার করা যাইবে না।
 
কমিশনের পাওনা আদায়
২৮। কোন ব্যক্তির নিকট হইতে কমিশনের পাওনা সরকারি দাবী হিসেবে Public Demands Recovery Act, 1913 (Ben. Act III of 1913) এর বিধানানুসারে আদায়যোগ্য হইবে।
 
কমিশনের আদেশ পুনর্বিবেচনা, আপীল ইত্যাদি
২৯। (১) এই আইনের অধীন কমিশনের কোন আদেশ দ্বারা কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হইলে উক্ত ব্যক্তি আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত ফরমে ও ফি প্রদান সাপেক্ষে উহা-
 
 
(ক) পুনর্বিবেচনার জন্য কমিশনের নিকট; অথবা
 
 
(খ) আপীলের জন্য সরকারের নিকট
 
 
আবেদন করিতে পারিবেনঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ২০ এর অধীন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত কোন প্রশাসনিক আর্থিক জরিমানা সংক্রান্ত আদেশ দ্বারা কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হইলে তাহার উপর আরোপিত জরিমানার-
 
 
(ক) ১০% অর্থ কমিশনে জমা করিয়া পুনর্বিবেচনার; বা
 
 
(খ) ২৫% অর্থ সরকারের নিকট জমা করিয়া আপীলের
 
 
আবেদন জরিমানার জমার রশিদসহ, করিতে পারিবেন।
 
 
(২) কমিশন বা, ক্ষেত্রমত, সরকার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, আবেদনকারী উপ-ধারা (১) এ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে যুক্তিসঙ্গত কারণে আবেদন করিতে ব্যর্থ হইয়াছে তাহা হইলে কমিশন বা, ক্ষেত্রমত, সরকার আবেদনকারীর আবেদনের ভিত্তিতে আরো অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিন সময় মঞ্জুর করিতে পারিবে।
 
 
(৩) পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে কমিশন এবং আপীলের ক্ষেত্রে সরকার যে ব্যক্তির অনুকূলে কোন আদেশ প্রদান করা হইয়াছে উক্ত ব্যক্তি শুনানীর যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান না করিয়া উক্তরূপ আদেশ, সংশোধন, পরিবর্তন বা বাতিল করিতে পারিবে নাঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, কমিশন বা সরকার পুনর্বিবেচনা বা, ক্ষেত্রমত, আপীল আবেদন প্রাপ্তির ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবে।
 
 
(৪) কমিশন কর্তৃক পুনর্বিবেচনাকালে প্রদত্ত আদেশ বা, ক্ষেত্রমত, সরকার কর্তৃক আপীলে প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
আপীল
৩০। (১) ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক প্রদত্ত রায় বা আদেশ দ্বারা কোন পক্ষ সংক্ষুব্ধ হইলে তিনি উক্ত রায় বা আদেশ প্রাপ্তির ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে স্থানীয় অধিক্ষেত্রে সেশন জজের আদালতে আপীল দায়ের করিতে পারিবেনঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক কোন রায় বা আদেশে অর্থদণ্ড আরোপ করা হইলে উক্ত রায় বা আদেশ দ্বারা কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হইলে, উক্ত রায় বা আদেশে উল্লিখিত আর্থিক দণ্ডের ২৫% সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জমা করিয়া জমার রশিদসহ উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সেশন জজ আদালতে আপীল দায়ের করিতে পারিবেন।
 
 
(২) সেশন জজের আদালত কর্তৃক আপীলে প্রদত্ত রায় চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
 
 
প্রতিযোগিতা তহবিল
৩১। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রতিযোগিতা তহবিল নামে কমিশনের একটি তহবিল গঠিত হইবে।
 
 
(২) প্রতিযোগিতা তহবিল, অতঃপর এই ধারায় তহবিল বলিয়া উল্লিখিত, এর পরিচালনা ও প্রশাসন, এই ধারা এবং বিধির বিধান সাপেক্ষে, কমিশনের উপর ন্যস্ত থাকিবে।
 
 
(৩) তহবিলে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথাঃ-
 
 
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বাৎসরিক অনুদান;
 
 
(খ) এই আইনের অধীন জমাকৃত ফিস, চার্জ, ইত্যাদি;
 
 
(গ) ব্যাংকে জমাকৃত অর্থের সুদ; এবং
 
 
(ঘ) প্রচলিত বিধি-বিধানের পরিপন্থী নহে এমন অন্য কোন উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
 
 
(৪) তহবিল হইতে চেয়ারপার্সন, কমিশনের সদস্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও চাকুরীর শর্তাবলী অনুসারে প্রদেয় অর্থ প্রদান করা হইবে এবং কমিশনের প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।
 
 
(৫) কমিশনের অর্থ কেবল উহার দায় ও দায়িত্ব প্রতিপালনের খরচ পরিশোধের জন্য ব্যয় করা হইবে এবং দৈনন্দিন কার্য পরিচালনার অর্থ কমিশন কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কোন তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং উক্ত ব্যাংক হইতে অর্থ উত্তোলনের পদ্ধতি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
 
 
ব্যাখ্যা।–এই ধারায় “তফসিলি ব্যাংক” বলিতে Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O 127 of 1972) এর article 2 (j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।
 
 
(৬) তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ বাংলাদেশ সরকারের সংযুক্ত তহবিলে জমা করা হইবে।
 
 
অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে কমিশনের স্বাধীনতা
৩২। সরকার প্রতি অর্থ-বৎসরে কমিশনের ব্যয়ের জন্য উহার অনুকূলে নির্দিষ্টকৃত অর্থ বরাদ্দ করিবে; এবং অনুমোদিত ও নির্ধারিত খাতে উক্ত বরাদ্দকৃত অর্থ হইতে ব্যয় করিবার ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করা কমিশনের জন্য আবশ্যক হইবে না।
 
 
বার্ষিক বাজেট বিবরণী
৩৩। কমিশন প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে এবং উক্ত অর্থ বৎসর শুরু হইবার পূর্বেই সরকার উক্ত বাজেট বিবরণীর ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় বাজেট অনুমোদন করিবে।
হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা
৩৪। (১) কমিশন যথাযথভাবে উহার হিসাবরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
 
 
(২) বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা-হিসাব নিরীক্ষক নামে অভিহিত, প্রতি বৎসর কমিশনের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা রিপোর্টের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও কমিশনের নিকট পেশ করিবেন।
 
 
(৩) উপ-ধারা (২) মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা-হিসাব নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কমিশনের সকল রেকর্ড, দলিল দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং কমিশনের কোন সদস্য বা যে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
 
 
কোম্পানী, ইত্যাদি কর্তৃক অপরাধ সংঘটন
৩৫। এই আইনের অধীন কোন অপরাধ কোন কোম্পানী কর্তৃক সংঘটিত হইয়া থাকিলে উক্তরূপ অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে কোম্পানীর এইরূপ মালিক, পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা প্রতিনিধি উক্ত অপরাধ সংঘটন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে সক্ষম হন যে, উক্ত অপরাধ তাহার অজ্ঞাতসারে সংঘটিত হইয়াছে অথবা উক্ত অপরাধ রোধ করিবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছেন।
 
 
ব্যাখ্যা।–এই ধারায়-
 
 
(ক) “কোম্পানী” বলিতে কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, সমিতি বা এক বা একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনও অন্তর্ভুক্ত হইবে; এবং
 
 
(খ) “পরিচালক” বলিতে উহার কোন অংশীদার বা পরিচালনা বোর্ড, যে নামেই অভিহিত হউক, এর সদস্যকেও বুঝাইবে।
 
 
তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ
৩৬। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কমিশন কর্তৃক বা কমিশনের পক্ষে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রাপ্ত হইলে উহা, এই আইন বা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনের উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোন কারণে, সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লিখিত পূর্বসম্মতি ব্যতিরেকে প্রকাশ করা যাইবে না।
 
 
(২) কমিশনের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী উপ-ধারা (১) এর বিধান লংঘন করিলে তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় অথবা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।
 
 
নির্দেশনা প্রদানে সরকারের ক্ষমতা
৩৭। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধানকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, এই আইনের অধীন কমিশনের ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলী সম্পাদনের ক্ষেত্রে কমিশন আইনের বাস্তবায়ন, কারিগরি এবং প্রশাসনিক বিষয়াদি ব্যতীত নীতিগত প্রশ্নে সরকারের নির্দেশনাসমূহ প্রতিপালনে বাধ্য থাকিবেঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এই উপ-ধারার অধীন সরকার কর্তৃক নির্দেশনা প্রদানের পূর্বে, যতদূর বাস্তবসম্মত হয়, কমিশনকে ইহার অভিমত প্রকাশের সুযোগ প্রদান করিতে হইবে।
 
 
(২) সরকারের সিদ্ধান্ত, নীতিগত প্রশ্নের হউক বা না হউক, চূড়ান্ত হইবে।
 
 
ক্ষমতা অর্পণ
৩৮। (১) চেয়ারপার্সনের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য সদস্যগণ তাহাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করিবেন এবং এইরূপ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে চেয়ারপার্সনের নিকট সদস্যদের জবাবদিহিতা থাকিবে।
 
 
(২) কমিশন উহার যে কোন ক্ষমতা, তৎকর্তৃক নির্ধারিত শর্তে, উহার যে কোন কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে।
 
 
বার্ষিক প্রতিবেদন
৩৯। (১) প্রতি অর্থ-বৎসর সমাপ্তির ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে কমিশন তৎকর্তৃক পূর্ববর্তী অর্থ-বৎসরে সম্পাদিত উহার কার্যাবলী সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবে।
 
 
(২) এই ধারার অধীন প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর রাষ্ট্রপতি উহা জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করিবেন।
 
 
জনসেবক
৪০। কমিশনের চেয়ারপার্সন, সদস্য ও অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী দণ্ডবিধির section 21 এর public servant (জনসেবক) অভিব্যক্তিটি যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে public servant (জনসেবক) বলিয়া গণ্য হইবেন।
 
সরল বিশ্বাসে কৃত কাজকর্ম রক্ষণ
৪১। এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, তজ্জন্য কমিশন, কোন সদস্য বা কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বা সরকার বা কমিশনের কর্তৃত্বাধীন কোন প্রকাশনা, রিপোর্ট বা কার্যধারার বিরুদ্ধে দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যধারা দায়ের বা রুজু করা যাইবে না।
এই আইনের বিধানাবলীর অতিরিক্ততা
৪২। এই আইনের বিধানাবলী অন্যান্য আইনের কোন বিধানের ব্যত্যয় না হইয়া উহার অতিরিক্ত হইবেঃ
 
 
তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের নির্দিষ্টকৃত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন এবং পূরণের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলী আপাততঃ বলবৎ অন্যান্য আইনের বিধানাবলীর উপর প্রাধান্য পাইবে।
 
 
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
৪৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
 
 
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
৪৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কমিশন, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে এবং সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন ও বিধির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ না হয় এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
 
 
ইংরেজীতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ
৪৫। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজীতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
 
 
(২) বাংলা পাঠ ও ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
 
 
রহিতকরণ ও হেফাজত
৪৬ । (১) Monopolies and Restrictive Trade Practices (Control and Prevention) Ordinance, 1970 (Ord. V of 1970) এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।
 
 
(২) উক্তরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও,-
 
 
(ক) উহার অধীন কৃত, সম্পাদিত বা গৃহীত যে কোন বা সকল ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত, সম্পাদিত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; এবং
 
 
(খ) উহার অধীন চলমান কার্যধারা এমনভাবে চলমান ও অব্যাহত থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীনই গৃহীত হইয়াছে।

Copyright © 2019, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs